শিক্ষকের অজ্ঞতায় কাজে লাগছে না বিদ্যালয়ে দেয়া কম্পিউটার
ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেওয়া কম্পিউটার, ল্যাপটপ শিক্ষার্থীদের কাজে লাগছে না। এর জন্য কম্পিউটারে দক্ষ শিক্ষকের অভাব আর প্রতিষ্ঠানের ভৌত অবকাঠামোকেই দুষছেন শিক্ষকেরা। অভিযোগ রয়েছে প্রতিষ্ঠানে দেওয়া ল্যাপটপগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে ব্যক্তিগত আর অফিসের টাইপের কাজে। ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে অনেক স্কুলের কম্পিউটার।
ঝিনাইদহ জেলা শিক্ষা অফিসের তথ্য মতে, সরকার থেকে ৪ শতাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেমন বিভিন্ন স্কুল, মাদরাসা ও কলেজগুলোতে ল্যাপটপ, কম্পিউটার ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর দেওয়া হয়েছে প্রায় বছর খানেক আগে। জেলার ৬টি উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থী রয়েছে ১ লাখ ৯৭ হাজার ৪শ ৭৭ জন।
কিন্তু সরেজমিনে গিয়ে অভিযোগ পাওয়া যায়, এসব কম্পিউটার ও ল্যাপটপ ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাদানে ব্যবহার হচ্ছে না। বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অফিসের কাগজপত্র টাইপের কাজে ব্যবহার হচ্ছে। ল্যাপটপগুলো কোনো কোনো শিক্ষক বাড়িতে নিয়ে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন। সরকারের নির্দেশ আছে মাল্টি মিডিয়ার মাধ্যমে শিক্ষা দান করার কিন্তু অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা গেছে সাধারণভাবে পাঠদান করাতে।
ধনঞ্জয়পুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী খাতুন জানান, আমাদের স্কুলে আজ অব্দি কম্পিউটার দ্বারা কোনো ক্লাস নেওয়া হয়নি।
ঝিনাইদহ কাঞ্চননগর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ প্রদীপ কুমার বিশ্বাস জানান, ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে কম্পিউটারগুলো যা মেরামতের জন্য বিভিন্ন দফতরে যোগাযোগ করা হলেও কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি। তিনি আরও জানান, ভৌত অবকাঠামো ও আর শিক্ষকদের অজ্ঞতার কারণেও ক্লাস নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।
কাঞ্চননগর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা জানান, কম্পিউটার না থাকার কারণে সমস্যা হয়। শিক্ষার্থীরা ভালোমত শিখতে পারে না।
জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিদর্শক মফিজুর রহমান আকাশ শিক্ষকদের অজ্ঞতার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দেওয়া ল্যাপটপ ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর ব্যবহার করা হচ্ছে না। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে দেখা গেছে ল্যাপটপগুলো শিক্ষকরা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করছেন। বন্ধ করে রাখা হয়েছে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমগুলো।
জেলা শিক্ষা অফিসার মো. মোকছেদুল ইসলাম জানান, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তৃণমূল পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের কম্পিউটারে দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেওয়া হয়েছিল ল্যাব, কম্পিউটার ও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর।
তিনি আরও জানান, শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার বিষয়ে দক্ষ করে তোলার জন্য কাজ করে যাচ্ছে জেলা শিক্ষা অফিস। কেউ যদি কম্পিউটারগুলো ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করে তাহলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান জেলা শিক্ষা অফিসার।
আহমেদ নাসিম আনসারী/এফএ/আরআইপি