দুই বন্ধুর ধর্ষণের শিকার তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন
রাজশাহীতে ফেসবুক বন্ধুদের পালাক্রমে ধর্ষণের শিকার তরুণীর মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার সকালে রাজশাহী মেডিকলে কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) তার এ পরীক্ষা হয়।
সেখান থেকে দুপুরে তাকে আদালতে নেয় শাহমখদুম পুলিশ। তরুণীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত তাকে নিজ বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন। ২৫ বছর বয়সী নির্যাতিতা ওই তরুণীর বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নামো শংকরবাটি নতুনহাট মোল্লাপাড়া এলাকায়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা নগরীর শাহমখদুম থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার আলী তুহিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, প্রাথমিকভাবে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে কিনা তা জানাননি চিকিৎসকরা। কয়েকদিনের মধ্যে তারা পুলিশকে লিখিত প্রতিবেদন দেবেন।
পরিদর্শক আরও জানান, ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার দুই যুবকের আদালতে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। কয়েকদিনের মধ্যে আদালতে ওই তরুণীর জবানবন্দি রেকর্ড করারও কথা রয়েছে।
গত সোমবার ওই তরুণী রাজশাহী শহরের নওদাপাড়া এলাকার গ্রিন গার্ডেন নামের একটি রেস্টহাউসে ধর্ষণের শিকার হন। রাজধানীর ধানমন্ডিতে অবস্থিত ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে বিবিএ পাস করা ওই তরুণীর বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার নামোশংকরবাটি এলাকায়।
তাকে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার দু’জন হলেন, ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্স (ইউআইটিএস) এর রাজশাহী শাখার সাবেক শিক্ষক সামশুল আলম বাদশা (৩৫) ও রাজশাহীর গোরহাঙ্গা এলাকার ইজিটাস কম্পিউটার দোকানের মালিক আবু ফায়েজ নাহিদ (২৬)।
এদের মধ্যে বাদশার বাড়ি রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার মচমইল গ্রামে। আর নাহিদের বাড়ি একই উপজেলার হাসনিপুর গ্রামে। তারা দুজনেই রাজশাহী শহরের বোয়ালিয়া থানার সাগরপাড়া এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানিয়েছে, সাবেক শিক্ষক বাদশার সঙ্গে ওই তরুণীর ফেসবুকে পরিচয় হয়। এরপর তাদের মধ্যে ফোনেও কথা হয়। পরবর্তীতে বাদশার বন্ধু নাহিদের সঙ্গেও ওই তরুণীর ফেসবুকে বন্ধুত্ব হয়।
চিকিৎসার জন্য ওই ছাত্রী গত সোমবার চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহীতে আসেন। চিকিৎসা শেষে তিনি বাদশার সঙ্গে দেখা করতে তাকে ফোন করেন। এরপর বাদশা তাকে নাহিদের কম্পিউটারের দোকানে ডেকে নেন। ওই তরুণী সেখানে গেলে দুপুরে খাওয়ার কথা বলে তাকে গেস্ট হাউসে নেন বাদশা ও নাহিদ।
পরে গেস্টহাইসের একটি কক্ষে পালাক্রমে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন দুই বন্ধু। এরপর সুযোগ বুঝে পালিয়ে যান। ওই রাতেই নির্যাতিতা তরুণী নগরীর শাহমখদুম থানায় গিয়ে মামলা করেন। ওই মামলায় মঙ্গলবার ভোররাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বাদশা ও নাহিদকে গ্রেফতার করে। ওই দিনই তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএএস/এমএস