স্ত্রী হত্যার অভিযোগে সিআইডি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা
স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগে সিআইডি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজিজুল হক সবুজের বিরুদ্ধে যশোরের একটি আদালতে মামলা হয়েছে। বুধবার তার শ্বশুর আজিজুল হক বাদী হয়ে যশোরের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত ‘ক’ অঞ্চলে মামলটি দায়ের করেন।
আদালতের বিজ্ঞ বিচারক হুমায়ুন কবীর বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পর্যালোচনা করে লিখিত অভিযোগপত্র আমলে নেন। যার পিটিশন নম্বর ২৫২/১৭। একই সঙ্গে আদালত মামলাটি গ্রহণ করে পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।
বাদী তার লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, ১৭ বছর আগে সাতক্ষীরা জেলার পাটকেলঘাটা থানার শুরুলিয়া গ্রামের আনোয়ার সরদারের ছেলে পুলিশ সদস্য আজিজুল হক সবুজের সঙ্গে তার মেয়ে মরিয়মের বিয়ে হয়। বিয়ের পরে তাদের ঘরে একটি পুত্র সন্তানের জন্ম হয়। এরপর থেকে সবুজ নানা উপায়ে যৌতুক দাবি করতে শুরু করে।
এক পর্যায়ে সে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী মরিয়ম খাতুন পারুলের ওপর শারীরিক নির্যাতন শুরু করে। একমাত্র মেয়ের সুখের কথা ভেবে কয়েক দফায় সবুজকে যৌতুক হিসেবে নগদ ৫ লাখ টাকা প্রদান করা হয়। কিন্তু তারপরও সবুজের চাহিদা না মেটায় সে তার স্ত্রী ও সন্তানের ওপর নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এক পর্যায়ে মেয়ে ও তার সন্তানের সুখের কথা ভেবে ফের ১৫ লাখ টাকা দিয়ে যশোর সদর থানার রঘুরামপুর গ্রামে জমিসহ একতলা বাড়ি ক্রয় করে মেয়ের নামে রেজিস্ট্রি করিয়ে দেন বাদী আজিজুল হক।
তার পরও সবুজের মন ভরেনি। সে আরও টাকার জন্য স্ত্রী মরিয়ম খাতুনের ওপর অত্যাচার করতে থাকে। একই সঙ্গে মাদকাসক্ত ওই সবুজে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এসব ঘটনা নিয়ে স্ত্রী মরিয়ম খাতুনের সঙ্গে সম্পকের্র অবনতি ঘটলে গত ২০ জুলাই সে নিজ বসত বাড়ির শোয়ার ঘরে স্ত্রী মরিয়মকে পিটিয়ে হত্যা করে।
পরে মরদেহের গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ঘটনাটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু নিহতের ছেলে ঘটনাটি দেখে ফেলায় সবুজ দ্রুত নিজ প্রাইভেটকারে করে নিহত স্ত্রী পারুলের মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় নিহতের পিতা আজিজুল হক বাদী হয়ে পরদিন রাতে যশোর কোতয়ালী থানায় আজিজুল ইসলাম সবুজের বিরুদ্ধে এজাহার দায়ের করেন।
কিন্তু পুলিশ গত কয়েকদিন ধরে এজাহারটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করতে গড়িমসি করায় বুধবার বাদী উক্ত এজাহারটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করতে যশোরের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আবেদন জানান।
বাদীর আইনজীবী গাজী আব্দুল কাদির জানান, বিজ্ঞ বিচারক বাদীর অভিযোগটি গ্রহণ করেন এবং এজাহারটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করতে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে এই মামলার বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেন আদালত। মামলায় এসআই সবুজ ছাড়াও তার মা নাছিমা খাতুন ও ভাই হামিদুলকে আসামি করা হয়েছে।
মিলন রহমান/আরএআর/জেআইএম