বান্দরবানে ফের পাহাড়ধসে নিহত ১, নিখোঁজ ৪
ভারি বর্ষণে বান্দরবানে পাহাড়ধসে চিংহ্লা মারমা নামে এক কিশোরী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন দুই নারীসহ আরও চারজন।
নিখোঁজরা হলেন- সিংমেচিং (১৭), সুমি বড়ুয়া (৩৫), রুমার কৃষি ব্যাংক কর্মকর্তা গৌতম নন্দী ও রুমার পোস্ট মাস্টার রবিউল। রোববার দুপুরে রুমা সড়কে দনিয়াল পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দমকল বাহিনী জানায়, ভারি বর্ষণে সকালে পূবালী সার্ভিসের একটি বাস বান্দরবান থেকে রুমা যাওয়ার পথে দনিয়াল পাড়ার কাছে এসে পৌঁছালে যাত্রীরা পাহাড়ধসে পড়া বন্ধ হওয়া সড়কটি পায়ে হেঁটে পার হচ্ছিল।
এ সময় সড়কের পাশে থাকা প্রায় ১০০ ফুট উঁচু পাহাড় থেকে মাটি ধসে পড়ে যাত্রীদের ওপর। এ সময় ৮ যাত্রী মাটি চাপা পড়ে। ঘটনার পরপরই মাটি চাপা পড়া যাত্রীদের উদ্ধারে নামে দমকল বাহিনী, সেনাবাহিনী এবং রেড ক্রিসেন্টের সদস্যরা।
এর মধ্যে, মাটি চাপা পড়া রুমা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বেলাল হোসেন, মিনিঝিড়ি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চিত্ত রঞ্জন তঞ্চঙ্গ্যা এবং একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার কর্মী অংথোয়াই মারমাকে উদ্ধার করে নিকটস্থ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকায় বিকেলে উদ্ধার অভিযানে বেগ পেতে হয় দমকল বাহিনীর সদস্যদের। তবে বিকেল ৩টায় মাটিতে চাপা পড়া নিখোঁজ চিংহ্লা মারমার মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চারজন নিখোঁজ রয়েছেন।
এছাড়া মূল সড়কে মাটি ধসে পড়ায় বান্দরবান-রুমা সড়ক যোগাযোগ পুরাপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।
বান্দরবান সদর দমকল বাহিনীর উপ-পরিচালক ইকবাল হোসেন বলেন, একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে মাটিতে চাপা পড়ে আছেন আরও চারজন।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য সিয়ংইয়ং ম্রো বলেন, মাটিতে চাপা পড়া নিখোঁজদের উদ্ধারে চেষ্টা করে যাচ্ছে উদ্ধারকর্মীরা। আশা করি তাদের উদ্ধার করতে পারবো।
এদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি, জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়সহ স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালে জেলা সদরে ৩ জন, ২০০৯ সালে লামা উপজেলায় শিশুসহ ১০ জন, ২০১০ সালে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ৫ জন, ২০১১ সালে রোয়াংছড়ি উপজেলায় দুইজন, ২০১২ সালে লামা উপজেলায় ২৮ জন ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় ১০ জন, ২০১৫ সালের লামায় ৪ জন, সিদ্দিকনগরে ১ জন ও সদরের বনরূপায় ২ জন এবং সর্বশেষ ২০১৭ সালে জুন মাসে সদরের কালাঘাটার দুটি স্থানে ৩ জন, লেমুঝিড়ি আগা পাড়ায় ৩ শিশু পাহাড়ধসে মারা যায়।
এএম/জেআইএম