পুতুলকে হাসপাতালে ভর্তি, সুস্থ করা সম্ভব
সদা হাস্যোজ্জল মেয়েটির বছর খানেক আগে থেকেই পেটের মধ্যে পানি জমতে শুরু করে। বেশ কয়েকবার পানি বেরও করা হয় সাতক্ষীরার স্থানীয় চিকিৎসকের মাধ্যমে। কিন্তু এরপর থেকেই দিন দিন শুকিয়ে যেন কঙ্কালে পরিণত হচ্ছে মেয়েটি। মাথার চুল পড়ে যাচ্ছে। আগের ছবি দেখে বোঝার উপায় নেই এ মেয়েটিই সে।
বলছিলাম সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার কুমিরা ইউনিয়নের দাঁদপুর গ্রামের মাজিদা আক্তার পুতুলের (২২) কথা। অসুস্থ হওয়ায় পুতুলকে মায়ের কাছে রেখে গেছে স্বামী। এখন আর কোনো খোঁজ নেয় না। লামিয়া আক্তার নামে ছোট্ট একটা মেয়ে রয়েছে পুতুলের। তারও দেখার কেউ নেই।
পুতুলের বাবা ফয়েজউদ্দীন মারা গেছেন ১৬ বছর আগেই। মানবিক এ ঘটনাটি নিয়ে গত শনিবার জাগো নিউজে ‘চিকিৎসার অভাবে কঙ্কালে পরিণত হচ্ছে পুতুল’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সংবাদের পর ব্যাপক সাড়া পড়ে যায় হৃদয়বান মানুষগুলোর মাঝে। অনেকেই যোগাযোগ করেন জাগো নিউজের এই প্রতিনিধির সঙ্গে। অবশেষে মঙ্গলবার রাতে নিজ উদ্যোগে এই প্রতিনিধি পুতুলকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ফেসবুক প্রচারণার পর হৃদয়বান মানুষের পাঠানো অর্থ তার চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে ব্যয় করা হচ্ছে। বর্তমানে মাজিদা আক্তার পুতুল হাসপাতালের ৪নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
ভর্তির পরই হাসপাতালে পুতুলকে দেখতে আসেন সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক কালের চিত্র পত্রিকার সম্পাদক অধ্যক্ষ আবু আহম্মেদ। এসময় তিনি পুতুলের মায়ের হাতে চিকিৎসার জন্য সহায়তা তুলে দেন।
সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের সিভিল সার্জন ডা. মো. তাওহিদুর রহমান জাগো নিউজকে বলেন, যেহেতু পরিবারটি গরিব, অর্থাভাবে এতদিন চিকিৎসা হয়নি তাই তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি ডায়বেটিসের কারণে দিন দিন মেয়েটি শুকিয়ে যাচ্ছে। এজন্য তার লিভারের সমস্যাও হতে পারে। কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা দেয়া হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে। তবে পুতুলকে সুস্থ করা সম্ভব।
এর আগে মাজিদা আক্তার পুতুল বাঁচার জন্য জাগো নিউজের কাছে অনুরোধ ও সহযোগিতা চেয়েছিলেন।
হাসপাতালে ভর্তির পর পুতুলের মা রিজিয়া বেগম বলেন, আপনাদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আপনাদের দয়ায় যদি আমার মেয়েটা সুস্থ হয় তবে এ ঋণ শোধ হওয়ার নয়। দোয়া করবেন আমার মেয়েটা যেন সুস্থ হয়।
কেউ সহযোগিতা দিতে চাইলে হাসপাতালে পুতুলের মায়ের হাতে তুলে দিতে পারেন।
আকরামুল ইসলাম/এমএএস/এমএস