ধরা ছোঁয়ার বাইরে ঠাকুরগাঁওয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতার খুনিরা
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের অর্থ বিষয় সম্পাদক আব্দুল মান্নান যুবলীগ নেতা সজিব দত্ত ও শান্ত'র ছুরিকাঘাতে নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন বলে প্রত্যক্ষদর্শী ও হামলায় আহত জুম্মন জানিয়েছেন। কিন্তু ঘটনায় ৫ দিনেও প্রকৃত খুনিদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
খুনিদের গ্রেফতার না করায় সঠিক বিচার নিয়ে হতাশায় রয়েছেন নিহতের পরিবার। খুনিদের দ্রুত গ্রেফতার ও শাস্তির দাবিতে পোস্টারিং করেছে এলাকাবাসী। প্রকৃত খুনিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলো।
স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুল মান্নানের বড় ভাই আবু আলী বাদী হয়ে ১৩ জুলাই বৃহস্পতিবার যুবলীগ নেতা সজিব দত্ত ও শান্তসহ অজ্ঞাত ৪ জনকে আসামি করে ঠাকুরগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার বাদী আবু আলী জানান, পুলিশ কী কারণে ঘাতকদের আটক করছে না আমরা বুঝতে পারছি না। মামলাটি ভিন্ন খাতে নিয়ে যাওয়ার জন্য একটি মহল পায়তারা করছে।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার ফারহাত আহম্মেদ বলছেন, খুনের সঙ্গে সরাসরি জড়িতদের আমরা চিহ্নিত করেছি। তাদের গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন প্রযুক্তিও ব্যবহার করা হচ্ছে। খুব দ্রুতই তাদেরকে আটক করতে সংক্ষম হবো।
উল্লেখ্য, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সজীব দত্তের সঙ্গে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের অর্থ-বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল মান্নানের টেন্ডার ও টোল আদায় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল।
কয়েকদিন আগে সিগারেট খাওয়াকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ সময় যুবলীগ নেতা সজীব দত্ত মান্নানকে পরে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
পরবর্তীতে আব্দুল মান্নান সজীব দত্তের বড় ভাই জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দত্তকে বিষয়টি অবহিত করলেও তা সুরাহা করেনি।
ওই ঘটনার জের ধরে যুবলীগ নেতা সজীব দত্ত ও শান্ত সহ ৪ জন মঙ্গলবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় আব্দুল মান্নানকে শহরের মুন্সিরহাট বিহারীপাড়া এলাকার গলিতে দেখে পেছন থেকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন।
এক পর্যায়ে মান্নান মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এ সময় আব্দুল মান্নানকে বাঁচানোর জন্য এগিয়ে এলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা জুম্মনকে সজীব দত্ত ছুরিকাঘাত করে মোটরসাইকেলযোগে পালিয়ে যান।
স্থানীয় লোকজন আব্দুল মান্নান ও জুম্মনকে উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে আনার পথে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে পথিমধ্যে মান্নান মারা যান। আর জুম্মনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
খুনের সঙ্গে জড়িতের অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা সজীব দত্তের বড় ভাই জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ দত্ত সমীরও পলাতক। সমীর দত্তের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
রবিউল এহসান রিপন/এফএ/এমএস