ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

কুড়িগ্রামে ৪২ ইউনিয়নের সাড়ে ৫শ গ্রাম প্লাবিত

জেলা প্রতিনিধি | কুড়িগ্রাম | প্রকাশিত: ০৩:১৫ পিএম, ১৪ জুলাই ২০১৭

বন্যার পানি সামান্য কমলেও ব্রহ্মপুত্রের পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় কুড়িগ্রামের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। 

টানা ৯ দিন ধরে স্থায়ী বন্যার ফলে প্রায় ৭শ বর্গকিলোমিটার এলাকা তলিয়ে গেছে। বন্যার ফলে ৪২টি ইউনিয়নের সাড়ে ৫শ গ্রামের আড়াই লক্ষ মানুষ এখনও পানিবন্দি। পানিতে ডুবে যাওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে ১৯৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এক জরুরী মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য তুলে ধরেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্রের পানি চিলমারী পয়েন্টে ৫ সেন্টিমিটার কমে বিপদসীমার ৩২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে শুক্রবার প্রবাহিত হচ্ছিল। কুড়িগ্রাম সেতু পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি অনেকটা কমে গিয়ে বিপদসীমার ৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যায় ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার আরও অন্তত ৮টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে রাত ৯টায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম-সচিব আলী রেজা মজিদ। 

তিনি জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জাল হোসেন চৌধুরী মায়া ও ত্রাণ সচিব শাহ কামাল বন্যা পরিস্থিতি নিজ চোখে দেখতে আগামী রোববার কুড়িগ্রামে আসছেন। আর সেই কারণে তিনি অগ্রবর্তি দল হিসেবে আগে এসেছেন। বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিং করছেন। বন্যা কবলিত একটি পরিবারও ত্রাণ বঞ্চিত থাকবে না। যখন যা প্রয়োজন তাই সরবরাহ করা হবে ঢাকা থেকে। এসময় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির অন্যান্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে অর্ধশত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার জেলা প্রতিনিধিরা অংশ নিয়ে তাদের অভিজ্ঞতা ও মাঠ পর্যায়ের সমস্যার কথা তুলে ধরেন। জেলা প্রশাসক ছালেহ মোহাম্মদ ফেরদৌস খান বন্যার্তদের কল্যাণে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। পাশাপাশি তিনি সাংবাদিকদের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।  

জেলা প্রশাসনের কন্ট্রোল রুম সূত্রে জানা যায়, বন্যায় ৪২টি ইউনিয়নের ৫৪৮টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বন্যা কবলিত হয়েছে প্রায় আড়াই লাখ মানুষ। বন্যায় ৩৮ হাজার ৩১২টি ঘর-বাড়ি, ১৭টি ব্রিজ, দেড় কিলোমিটার বাঁধ, ১৪০ কি.মি রাস্তা, ৪৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। 

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের সংখ্যা ৪৯ হাজার ৩৯২ জন। ফসল নিমজ্জিত ৩ হাজার ৬২০ হেক্টর। বন্যার পানিতে ডুবে মারা গেছে ৩ জন। এ পর্যন্ত বন্যার্তদের মাঝে ৪০০ মেট্রিকটন চাল, ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, শুকনো খাবার ৪ হাজার প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। বন্যার কারণে ১২৯টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। 

নাজমুল/ এমএএস/পিআর