বগুড়ায় বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি, পানি বাড়ছেই
বগুড়ার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নেয়া লোকজনের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। বুধবার বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর পানি বেড়ে ১১ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপদসীমার ৫৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বগুড়ায় দুদিনের ভারি বর্ষণের পর যমুনা তীরবর্তী সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলার বন্যা কবলিত এলাকার লোকজন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধসহ উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছে। বাঁধে আশ্রয় নেয়া পরিবারগুলোকে তাদের গবাদিপশু নিয়ে গাদাগাদি করে বসবাস করতে দেখা গেছে।
উপজেলার কুতুবপুর, কামালপুর, চন্দনবাইশা, চালুয়াবাড়ী, কাজলা, কর্ণিবাড়ী, বোহাইল, হাটশেরপুর ও সারিয়াকান্দি ইউনিয়নের ৫৭টি গ্রামের ১০ হাজার পরিবারের ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সারওয়ার আলম বলেন, বন্যায় নয়টি ইউনিয়নে ৫৭টি গ্রামে পানি প্রবেশ করছে। বন্যা দুর্গতদের মাঝে ৮৫ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে।
বগুড়ার ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা শাহারুল ইসলাম মো. আবু হেনা জানান, বন্যা কবলিত এলাকায় নগদ চার লাখ টাকা, ২৫০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ হয়েছে। এর মধ্যে সারিয়াকান্দি উপজেলায় এক লাখ টাকা, একশ মেট্রিক টন চাল, সোনাতলায় ২০ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করা হয়েছে। বন্যায় কমবেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৪ ইউনিয়নের ৭৫ গ্রামের ১৩ হাজার ২২২টি পরিবার। সারিয়াকান্দি আশ্রয়ণ প্রকল্পে আশ্রয় নিয়েছে ৭৬৫টি পরিবার। বাঁধের উপর ও বিভিন্ন বিদ্যালয়ে তিন হাজার ৩৫৫টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।
বগুড়া জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদফতরের প্রকৌশলী মো. আনোয়ারুজ্জামান জানান, বাঁধে আশ্রিতদের জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ২৩টি হস্তচালিত নলকূপ ও ৫০টি কাঁচা টয়লেট স্থাপন করা হয়েছে। বন্যা কবলিতদের জন্য প্রয়োজনে আরও কাঁচা টয়লেটের ব্যবস্থা করা হবে।
বগুড়া জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক প্রতুল চন্দ্র জানান, পাট, ধান, সবজি ও বীজতলাসহ তিন হাজার ৮৭৭ হেক্টর জমির ফসল বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গোটা জেলায় এক হাজার ৩৬৭ হেক্টর জমির আউশ, দুই হাজার ৪৪০ হেক্টর জমির পাট, ৩০ হেক্টর বীজতলা, ৪০ হেক্টর সবজির খেত তলিয়ে গেছে। এছাড়া আটটি পুকুর বন্যার পানিতে ভেসে গেছে।
লিমন বাসার/আরএআর/পিআর