বংশাই ও ঝিনাই নদীতে তীব্র ভাঙন
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বংশাই ও ঝিনাই নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই সঙ্গে নদীতে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। অব্যাহত ভাঙনে প্রায় দেড় শতাধিক বসতবাড়ি, মন্দির, রাস্তা-ঘাট, ফসলি জমি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, একটি মসজিদ, একটি পাকা রাস্তা ও সড়ক রক্ষা বাঁধ। বসতবাড়ি হারিয়ে অনেকেই খোলা আকাশের নিচে আবার কেউ কেউ অন্যের বাড়িতে বসবাস করছেন।
এলাকাবাসী জানান, স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রভাবশালী একটি মহল প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ড্রেজার মেশিন দিয়ে শত শত ট্রলার বালু উত্তোলন করে। এছাড়া শুষ্ক মৌসুমে ভেকু মেশিন দিয়ে নদীর পাড় কেটে হাজার হাজার ড্রাম ট্রাক মাটি লুট করে। এ কারণে বর্ষা মৌসুমে নদীর ভাঙন শুরু হয়। প্রতি বছর নদী ভাঙন হলেও এ বছর তীব্র আকার ধারণ করেছে।
ভাঙনের ফলে কুর্ণী-ফতেপুর সড়কের বৈলানপুর এলাকার পাকা অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া সুতানড়ী ও থলপাড়া এলাকায় কয়েকটি পাট ক্ষেত, গাছের বাগান ও লেবু বাগানসহ সহস্রাধিক একর জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
একইভাবে এ উপজেলার দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্যবসা কেন্দ্র পুরানো ফতেপুর বাজারের কমপক্ষে ৩০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে চলে গেছে। এছাড়া বানকাটা কালিমাতা মন্দিরের অধিকাংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।
অপরদিকে চাকলেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুতানড়ী মসজিদ, শিব মন্দির ও ফতেপুর উচ্চ বিদ্যালয় হুমকির মুখে পড়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছেন।
ফতেপুর ইউনিয়নের ভাঙন কবলিত এলাকার ইউপি সদস্য ফজলুর রহমান, মজনু মিয়া, রিয়াজ উদ্দিন, দিলীপ রাজবংশী ও সোলাইমান মিয়া জানান, তাদের ইউনিয়নের অধিকাংশই বংশাই ও ঝিনাই নদী ঘেষা। এবছর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে।
ফতেপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রউফ জানান, ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে সাহায্য প্রদানসহ নদীতে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করার জন্য সরকার প্রধানসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাত সাদমীন বলেন, বিপুল সংখ্যাক পরিবার এবং ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এছাড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, পাকা রাস্তা, ফসলি জমি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের ক্ষতি সাধান হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির মাধ্যমে সহায়তা প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এফএ/এমএস