ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ইলিশের দেখা পাচ্ছেন না জেলেরা

প্রকাশিত: ০৪:২০ এএম, ০৯ জুলাই ২০১৭

ভরা মৌসুমের শুরুতে ঝালকাঠির সুগন্ধা, বিষখালী, গাবখান ও হলতা নদীতে কাঙ্খিত ইলিশের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। ইলিশ ধরা না পড়ায় অভাব-অনটনে ঋণ করে চলছে জেলেদের সংসার। জেলেদের অধিকাংশই সুগন্ধা, বিষখালী, গাবখান ও হলতা নদীতে মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করেন।

প্রতিবছর মে মাসে কিছুটা কম থাকলেও জুন মাসের শুরু থেকেই জেলেদের জালে ধরা দেয় রুপালি ইলিশ। কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা পেয়ে হাসিতে ভরে ওঠে জেলেদের মুখ। সারা বছরের ঋণ পরিশোধ করতে থাকেন দরিদ্র জেলেরা।

জাটকা ইলিশ ধরার নিষিদ্ধ সময় শেষে জুন মাস গিয়ে জুলাই শুরু হলেও ইলিশের দেখা পাচ্ছেন না জেলেরা। জলিল, জাহাঙ্গীর, আল-আমিনসহ বেশ কয়েকজন জেলে জানান, নদীতে ইলিশ মাছ ধরা না পড়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। দিনরাত নদীতে জাল ফেলে যে কয়টি মাছ পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়ে ইঞ্জিনচালিত নৌকার তেল খরচও উঠছে না।

অন্যদিকে জেলেদের সুদ ও দাদন দিয়ে এখন বেকায়দায় পড়েছেন এনজিও এবং ব্যবসায়ীরা। মাছ ধরা না পড়ায় জেলেরা ঋণের টাকা পরিশোধ করতে পারছেন না। জেলেরা বিভিন্ন ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে নৌকা ও জাল কিনে নদীতে নেমেছেন। কিন্তু সারাদিন জাল ফেলেও মাছ না পাওয়ায় তারা হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। হতাশায় এখন অনেক জেলেই নদীতে যাচ্ছেন না। নদীর তীরেও অনেকে নৌকায় বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন। অন্য কোনো আয়ের উৎস না থাকায় বেকার হয়ে পড়েছেন জেলেরা। বেশিরভাগ জেলে আবার ব্যাংক ও এনজিও ঋণের কিস্তির ভয়ে বাড়িতে যাচ্ছেন না। বর্তমানে জেলেরা পরিবার-পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন।

এদিকে নদীতে যে পরিমাণ ইলিশ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে তার দাম সাধারণ ক্রেতাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সুগন্ধা, বিষখালী, গাবখান ও হলতা নদীর গভীরতা ক্রমান্বয়ে কমে যাওয়ায় ইলিশের প্রজনন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে নদীতে ভরা মৌসুমে ইলিশ মাছের আকাল দেখা দিয়েছে। নদীর যে সব অংশে জাটকা ইলিশ বড় হয় সে রকম ৮/১০টি স্পট দিন দিন ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ইলিশ না পেয়ে নদী থেকে প্রতিদিনই জেলেদের প্রায় শূন্য হাতে ফিরতে হচ্ছে। ইলিশের আকালে উপকূলীয় এলাকার জেলে পল্লীগুলোতে চরম দুর্দিন নেমে এসেছে। ইলিশ আহরণের মৌসুমে ইলিশ না পাওয়ায় চরম হতাশায় দিন কাটছে জেলে, আড়তদার, দাদন ব্যবসায়ী ও মৎস্যজীবী শ্রমিকদের। দাদন নেয়া জেলেরা দাদন শোধ ও জীবন ধারণের চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

সরেজমিনে বাজার ঘুরে দেখা যায়, মৌসুমের দুই মাস অতিবাহিত হলেও নদীতে ইলিশ ধরা না পড়ায় জেলেসহ সবার মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রীতিষ কুমার মন্ডল জানান, নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে গোপনে গোপনে জাটকা ও মা ইলিশ নিধন করার ফলে ইলিশের উৎপাদন কমে গেছে। তাই এখন ভরা মৌসুম হলেও জেলেরা ইলিশের দেখা পাচ্ছেন না। যা পাচ্ছে তা আকাঙ্খার চেয়ে অনেকাংশেই কম।

তিনি বলেন, ইলিশ রক্ষার প্রতি সবাই যত্নবান হলে দেশ সমৃদ্ধ হবে, আমরাও লাভবান হবো

আতিকুর রহমান/আরএআর/এমএস