চালের মূল্য ৩০ মার্কিন ডলার বাড়াল ভারতীয় ব্যবসায়ীরা
হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে কম শুল্কে চাল আমদানির খবরে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা চালের রফতানি মূল্য বাড়িয়ে দিয়েছে। যে চাল কিছুদিন আগে প্রতি মেট্রিক টন ৩৯০ থেকে ৪০০ মার্কিন ডলারের আমদানি করা হতো সেই একই চাল এখন ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে ৪২০ থেকে ৪৩০ মার্কিন ডলারে।
আমদানিকারক হারুনুর রশীদের অভিযোগ, ভারতীয় ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে দেশের বাজারে চালের দাম আশানুরূপ কমছে না। হিলি স্থলবন্দরের আড়ৎগুলোতে ভারত থেকে আমদানি করা প্রতি কেজি মোটা জাতের স্বর্ণা চাল আগে ৪২ থেকে ৪৩ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৩৯ টাকায়। আর চিকন জাতের রত্না চাল আগে ৪৪ টাকায় বিক্রি হলেও এখন বিক্রি হচ্ছে ৪১ টাকা কেজি দরে।
দেশের খোলাবাজারে ভোক্তা পর্যায়ে চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে গত ২০ জুন চালের আমদানি শুল্ক ২৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ নির্ধারণ করে সরকার।
সেই সঙ্গে ৩ শতাংশ রেগুলেটরি ডিউটিও পুরোপুরি তুলে নেয়া হয়। এতে প্রতি কেজি চালের দাম ৬ থেকে ৭ টাকা কমার কথা থাকলেও বাস্তবে দাম কমেছে মাত্র ৩ টাকা। যা ভোক্তা পর্যায়ে তেমন কোনো প্রভাব পড়ছে না বলে মনে করেন বন্দরের সাধারণ চাল ব্যবসায়ীরা।
ভোক্তা পর্যায়ে চালের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে যে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার তা পুরোপুরি কাজে আসাছে না বলে অভিযোগ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে হিলি স্থলবন্দরে চাল নিতে আসা ব্যবসায়ীদের।
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি থেকে হিলি স্থলবন্দরে পাইকারি চাল নিতে আসা আ. রশিদ মন্ডল অভিযোগ করেন, ভারতের ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের কারণে আমাদের দেশের বাজারে চালের দাম কমছে না। চালের দাম কেজি প্রতি ৬ টাকা কমার কথা থাকলেও কমেছে মাত্র ৩ টাকা। এ নিয়ে সাধারণ ভোক্তা পর্যায়ে চাল বিক্রি করতে দাম নিয়ে প্রায় ঝামেলায় পড়তে হচ্ছে।
এদিকে, বাংলাদেশে চালের আমদানি শুল্ক কমিয়ে দেয়ার খবরে বাংলাদেশে চাল রফতানিতে চালের রফতানি মূল্য প্রতি মেট্রিক টনে ৩০ থেকে ৩৫ মার্কিন ডলার বাড়িয়ে দিয়েছে ভারতের ব্যবসায়ীরা। ফলে ৩৯০ মার্কিন ডলারে চাল এখন হিলি স্থলবন্দরের ব্যবসায়ীদের আমদানি করতে হচ্ছে ৪২০ থেকে ৪৩০ মার্কিন ডলারে।
হিলি স্থলবন্দরের চাল আমদানিকারক মামুনুর রশিদ লেবু জানান, একদিকে সরকার দেশের বাজারে কেজি প্রতি চালের ৬ টাকা ডিউটি কমিয়ে দিয়েছে অন্যদিকে ভারতরে ব্যবসায়ীরা চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। এ কারণে দেশের বাজারে চালের দাম কমছে না।
চাল আমদানিকারক আনিছুর রহমান জানান, প্রায় প্রতিদিনই ভারতের ব্যবসায়ীরা চালের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীদের কিছুই করার নেই বলে মনে করেন হিলি স্থলবন্দরে চাল আমদানিকারক ললিত কেশেরা।
চাল আমদানিকারক আলম চৌধুরী মনে করেন, চালের ওপর অবশিষ্ট ১০ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহার করে চাল আদানিতে সম্পূর্ণ শুল্ক মুক্ত করলে দেশের বাজারে চারের দাম আরও ২ থেকে ৩ টাকা কমানো সম্ভব হবে।
এদিকে হিলি স্থলবন্দর সূত্রে জানা গেছে, চালের আমদানি শুল্ক কমানোর পর ঈদের আগে ও পরে গত ৬ কর্মদিবসে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে প্রায় চাল ৭ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানি হয়েছে।
এমদাদুল হক মিলন/এএম/এমএস