কমলনগরে ছাত্রলীগ সভাপতিসহ ৩ জনকে কুপিয়ে জখম
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠনের জের ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি চৌধুরী মাহমুদুন্নবী সোহেলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করায় নবগঠিত ছাত্রলীগের সভাপতি মাইন উদ্দিনসহ তিন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে উপজেলার হাজিরহাট-কাদিরপন্ডিতেরহাট সড়কের জাজিরা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ছাত্রলীগের সদ্য বিলুপ্ত উপজেলা কমিটির নেতারা এ হামলা চালায়। তারা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতির অনুসারী হিসেবে পরিচিত। আহতরা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হোসেন লোটাসের অনুসারী।
আহতরা হলেন ছাত্রলীগ সভাপতি মাইন উদ্দিন, চর মার্টিন ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি রাজু ভুঁইয়া, চর কাদিরা ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সভাপতি ওমর ফারুক সাগর। তাদের সদর হাসপাতাল ও স্থানীয় ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।
দলীয় সূত্র জানায়, পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন ভূঁইয়াকে সম্প্রতি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি চৌধুরী মাহমুদুন্নবী সোহেল লাঞ্ছিত করে। শাহাদাত জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিব হোসেন লোটাসের অনুসারী হিসেবে পরিচিতি।
এর প্রতিবাদে কমলনগর উপজেলার হাজিরহাট বাজারে সকাল ১১টার দিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাইন উদ্দিনের নেতৃত্বে পুলিশ পাহারায় বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। একই মিছিল থেকে ডাকাত খোকনের হাতে হাতুড়ি পেটায় নিহত রামগতির চর আবদুল্লাহ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলামের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতেও স্লোগান দেয়া হয়।
মিছিল শেষে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে বিলুপ্ত হওয়া উপজেলা নেতারা মাইন উদ্দিনসহ তিনজনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। তাদের হাত-পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্তাক্ত জখমের চিহ্ন রয়েছে।
কমলনগর উপজেলা নবগঠিত ছাত্রলীগের সভাপতি আহত মাইন উদ্দিন বলেন, কমিটি গঠনের জের ধরে বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি আবদুস সামাদ রাজু, সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান বিপ্লব ও ছাত্রলীগ নেতা হারুনসহ আরও কয়েকজন আমাদের পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। কোনো কারণ ছাড়াই তারা পরিকল্পতভাবে এ হামলা চালিয়েছে।
সদ্য বিলুপ্ত হওয়া কমিটির সভাপতি আবদুস সামাদ রাজু বলেন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি চৌধুরী মাহমুদুন্নবী সোহেলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করায় নেতাকর্মীরা তাদের ধাওয়া করে। এ সময় দ্রুত মোটরসাইকেল নিয়ে পালাতে গেলে দুর্ঘটনায় তারা আহত হয়।
কমলনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকুল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, হামলার খবর পেয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি চৌধুরী মাহমুদুন্নবী সোহেল জানান, রামগতির ছাত্রলীগ নেতা নজরুল ইসলামের হত্যার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) সেখানে বিক্ষোভ-সমাবেশ করা হয়।
এ সময় খুনিদের গ্রেফতার করতে আল্টিমেটাম দেয়া হয়েছে। এরপর ছাত্রলীগ নেতা হত্যায় জড়িতরা ছাত্রলীগের ব্যানারে আমার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৫ মার্চ আবদুস সামাদ রাজুকে সভাপতি ও রাকিবুল হাসান বিপ্লবকে সাধারণ সম্পাদক করে কমলনগর উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়। তিন মাস পর ১৩ জুন মাইন উদ্দিনকে সভাপতি ও সাদ্দাম হোসেন আবিদকে সাধারণ সম্পাদক করে নতুন কমিটি ঘোষণা করে জেলা ছাত্রলীগ।
নতুন কমিটি গঠনের পর থেকে সদ্য বিলুপ্ত কমিটির নেতারা নতুন কমিটি বাতিল করে আগের কমিটি পুনর্বহাল করার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। ২১ জুন ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটি মুন্সিরহাট বাজারে আনন্দ মিছিল বের করলে বিলুপ্ত কমিটি তাদের ধাওয়া করে।
কাজল কায়েস/এএম/পিআর