ট্রাকচালকের আসনে ছিল হেলপার
রংপুরের পীরগঞ্জে সিমেন্ট বোঝাই ট্রাক উল্টে ১৭ জন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৮ জন। তারা সবাই ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফিরছিলেন। শনিবার ভোরে উপজেলার রংপুর-ঢাকা মহাসড়কের কলাবাগান নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
ট্রাকটি বগুড়া অতিক্রম করার পর চালকের ঘুম পেলে হেলপারকে চালাতে দিয়ে তিনি ঘুমিয়ে পড়েন। আর এতেই বিপত্তি ঘটে বলে জানিয়েছেন দুর্ঘটনায় আহত দুলাল, জামিলা ও খাদিজা বেগম।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঢাকা থেকে রংপুরগামী সিমেন্ট বোঝাই একটি ট্রাকের উপরে বসে প্রায় ৩০-৩৫ জন ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফিরছিলেন। শনিবার ভোর পৌনে ৫টার দিকে উল্লেখিত এলাকায় পৌঁছে ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই দুই নারী ও এক শিশুসহ ১২ জন এবং পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর আরও ৫ জন মারা যান।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত ৮ জনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে।
দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ৬ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে, এরা হলেন লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষ খোসা গ্রামের থালেক মিয়ার ছেলে রবিউল ইসলাম (৪০), আইবুব আলীর ছেলে আজিজুল ইসলাম (৪৫), লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার উত্তর বত্রিশখামারী গ্রামের সন্টু মিয়ার মেয়ে সুবর্না (১০), আহম্মেদ আলীর ছেলে কহিনুর ইসলাম (৫০), আনছার আলীর ছেলে ঝন্টু মিয়া (৩৫) ও একই উপজেলার শাহাপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে মজনু মিয়া (৪৮)।
পীরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম জানান, সিমেন্ট বোঝাই ট্রাকটি ঢাকা থেকে রংপুরে আসছিল। ট্রাকটি গাজীপুরে পৌঁছালে ৩০/৩৫ জন পোশাক শ্রমিক ও দিনমজুর তাতে চড়েন। এর মধ্যে সাত জন ছিলেন নারী। তাদের সবার বাড়ি লালমনিরহাটের সীমান্তবর্তী কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।
ট্রাকটি পীরগঞ্জের কলাবাগান এলাকা দিয়ে দ্রুতবেগে যাওয়ার সময় ড্রাইভার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এতে ট্রাকটি মসহাসড়কে উল্টে যায়।
হাইওয়ে রংপুরের সিনিয়র এএসপি ধীরেন্দ্র চন্দ্র জানান, দুর্ঘটনা কবলিত ট্রাক ও মরদেহগুলি বড়দরগাহ হাইওয়ে পলিশের হেফাজতে রয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হবে এবং মানবিক কারণে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহগুলি তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
জিতু কবীর/এফএ/জেআইএম