পাহাড়ধস : বাকরুদ্ধ স্ত্রী, বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন বাবা-মা
রাঙামাটির মানিকছড়িতে পাহাড় ধসে নিহত সেনাসদস্য মো. আজিজুর রহমানের (৩১) বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। স্বামীর মৃত্যুর কথা শুনে স্ত্রী বাকরুদ্ধ হয়ে আছেন। সেই সঙ্গে সন্তানের মৃত্যুর খবর শুনে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন মা-বাবা।
পাহাড়ধসের ঘটনার তিনদিন পর বৃহস্পতিবার নিহত সৈনিক আজিজের মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানান এক সেনা কর্মকর্তা।
এ নিয়ে পাহাড় ধসের ঘটনায় পাঁচ সেনা সদস্যের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মাদারীপুরের সেনাসদস্য মো.আজিজুর রহমানের তিনদিন নিখোঁজ থাকার পর বৃহস্পতিবার সকালে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এ খবর সেনা সদস্য আজিজের বাড়িতে পৌঁছালে সবাই কান্নায় ভেড়ে পড়েন। এলাকার শত শত মানুষ তাদের বাড়ি ভিড় করছেন। প্রতিবেশীরা যেন তাদের একটু সান্ত্বনা দেয়ার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন। কিছুতেই কান্না থামছে না পরিবারের সদস্যদের।
মাদারীপুর সদর উপজেলার শ্রীনাদী বাজিতপুর গ্রামের মঙ্গলবার সকালে নিখোঁজের খবর পাওয়ার পর থেকেই মা-বাবা বোনসহ পরিবারে সবাই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন। কেউ কোনো কথা বলতে গেলে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।
সেনাসদস্য মো. আজিজুর রহমান বাজিতপুর মো. খলিল বেপারীর বড় ছেলে। ২০০২ সালে এসএসসি পাস করার পর ২০০৪ সালে সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। তিনি গত চার বছর আগে একই জেলার রাজৈর উপজেলার দুর্গাবর্দী গ্রামের নিপাকে বিয়ে করেন। তাহাসিন নামে তাদের দুই বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
এদিকে, নিখোঁজ সেনাসদস্য আজিজের স্ত্রী শোকে পাথর হয়ে গেছেন। কারও সঙ্গে কোনো কথা বলছেন না। কিছুক্ষণ পর পর ফুফিয়ে কাঁদছেন। কান্না ও কষ্টকে সঙ্গী করে শেষ বিদায় নিয়েছেন তার সঙ্গী। সেই শোকেই তিনি নিশ্চুপ হয়ে আছেন।
বাবা মো. খলিল বেপারী অঝোরে কাঁদছেন আর বলছেন, আমার নিজের কিছুই নেই। আজিজ সেনাবাহীনিতে চাকরি করে সুখ শান্তিতেই ছিল। আমার খুশির সীমা ছিল না। আমার বিশ্বাস আমার ছেলে বেঁচে আছে। কিছুতেই বিশ্বাস হচ্ছে না আমার ছেলে মারা গেছে। এরকম বিভিন্ন বিলাপ করে কান্নায় ভেঙে পড়েন আর বার বার জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন বাবা মো. খলিল বেপারী।
মাদারীপুর সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল মোর্শেদ জানান, সেনা সদস্য মো. আজিজুর রহমানের মরদেহ তিনদিন পর উদ্ধার হয়েছে বলে আমরা জানতে পারি। নিহতের মরদেহ তার নিজ গ্রামে আনার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে।
এ কে এম নাসিরুল হক/এএম/জেআইএম