রাস্তার কাজে ব্যবহার হচ্ছে নম্বরবিহীন ইট
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বিলাশবাড়ী ইউনিয়নের নাজিরপুর থেকে এনায়েতপুর আড়াই কিলোমিটার রাস্তায় নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে।
কাজের শুরু থেকে অনিয়ম হওয়ায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরকে (এলজিইডি) একাধিকবার স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ দিয়েও কোনো কাজ হয়নি। এলাকাবাসীর অভিযোগ কর্তৃপক্ষের জোগসাজশেই এ অনিয়ম করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিলাশবাড়ী ইউনিয়নের নাজিরপুর থেকে এনায়েতপুর আড়াই কিলোমিটার রাস্তাটি চলতি বছরের টেন্ডারের প্রেক্ষিতে ১ কোটি ৫১ লাখ ৬০ হাজার ১১৪ টাকা ব্যয়ে পাকাকরণের নির্মাণকাজ পান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তরফদার ট্রেডার্স।
রাস্তাটির নির্মাণের শুরু থেকেই অনিয়ম করা হচ্ছে। বক্সকাটিংয়ের পর রোলার দিয়ে না ডলেই কমশন ঢালাইয়ে বালুর পরির্বতে দেয়া হয়েছে মাটি। আর সাববেজে নিম্নমানের ইট ও বালু।
এছাড়া ডব্লিউবিএম কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে নিম্নমানের নম্বরবিহীন ইট। কাজটি করা হচ্ছে ঠিকাদারের খেয়াল খুশি মতো কচ্ছপ গতিতে। এ জন্য এলাকাবাসীর ভোগান্তিও বেড়েছে চরম আকারে। বহুদিনের কাঙ্ক্ষিত রাস্তাটি বেশি কিছু করার কারণে যদি কাজ বন্ধ হয়ে যায় এই কারণে প্রতিবাদ করতেও ভয় করছে এলাকাবাসী।
এনায়েতপুর গ্রামের বয়োজ্যেষ্ঠ আক্তার হামিদ বলেন, রাস্তাটি যে ইট দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে তা কোনো নম্বরের মধ্যেই পড়ে না। বৃষ্টিতে নষ্ট হওয়া এই ইটগুলো ৩ নম্বর এবং ভুষা।
স্থানীয় বাসিন্দা মোসলেম, জিয়াউল, রেজাউল, রাকিব, মজিদসহ আরও অনেকে জানান, শুরু থেকেই নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে এই রাস্তাটির কাজ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে একাধিকবার এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। কর্তৃপক্ষের জোগসাজশেই রাস্তার কাজে অনিয়ম করা হচ্ছে।
এছাড়া কাজ শুরু হয়েছে প্রায় পাঁচ মাস হবে। এতো ধীর গতিতে কাজ হওয়ায় জনদুর্ভোগও হচ্ছে। আমরা তেমন প্রতিবাদও করতে পারছি না এ জন্য যে দীর্ঘদিনের চাওয়া আমাদের এই রাস্তার কাজটি যদি বন্ধ হয়ে যায় এই ভয়ে।
তরফদার ট্রেডার্স’র সাব ঠিকাদার শামীম হোসেন বলেন, কাজটির বিষয়ে প্রথমে যে অভিযোগ উঠেছিল তা সমাধান করে দেয়া হয়েছে। ইটগুলো ফেরত আনা হয়েছে। বর্তমানে কাজ ভালো হচ্ছে। কোনো সমস্যা নেই। তবে ইট ভাটার মালিক খারাপ ইট দিতে পারে।
কাজটি পর্যবেক্ষণের দায়িত্বরত এসও ফেরাউল ইসলাম বলেন, এ রাস্তাটির বিষয়ে আমার কাছে এখনও পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি। কাজটি ভালোভাবেই হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মুনিরুজ্জামান বলেন, প্রাথমিক অবস্থায় খারাপ ইট দিয়ে কাজ হওয়ায় এলাকাবাসীর অভিযোগ ছিল। পরে খারাপ ইটগুলো অপসারণ করা হয়। সে সময় এক্সেন স্যারও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। বর্তমানে ভালো ইট দিয়েই কাজ হচ্ছে। কোনো ধরনের সমস্যা নেই। তারপরও খোঁজ নিয়ে দেখব।
আব্বাস আলী/এএম/জেআইএম