ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

বরিশাল রুটে নামছে অত্যাধুনিক ৩ লঞ্চ

প্রকাশিত: ১০:৫৮ এএম, ০৫ জুন ২০১৭

ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঢাকা-বরিশাল-ঝালকাঠি নৌরুটে যাত্রী পরিবহনে দিবা-রাত্রি সার্ভিসে চালু হচ্ছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির বিলাসবহুল আরও ৩টি লঞ্চ।

নিজাম শিপিং লাইন লিমিটেড কোম্পানি সমুদ্রগামী বড় জাহাজের আদলে তৈরি করেছে এ লঞ্চগুলো। এর মধ্যে দুটি কাটারম্যান টাইপ ভ্যাসেল রয়েছে। ভ্যাসেল দুটির নাম দেয়া হয়েছে অ্যাডভেঞ্চার-৫ ও অ্যাডভেঞ্চার-৬। এগুলো দিনের বেলায় চলাচল করবে বরিশাল-ঢাকা নৌপথে।

বরিশালের দপদপিয়া এলাকায় কীর্তনখোলা নদীর তীরে শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডের ডক ইয়ার্ডে তিনতলা বিশিষ্ট কাটারম্যান টাইপ ভ্যাসেল দুটির নির্মাণকাজ প্রায় শতভাগ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।

দুই একদিনের মধ্যে পরীক্ষামূলক নদীতে ভাসানো হবে ভ্যাসেল দুটি। দেশি-বিদেশি অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর ভ্যাসেল দুটি উদ্বোধনের জন্য শেষ মুহূর্তের রঙ ও সাজসজ্জার কাজ চলছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ঈদের আগেই যাত্রীসেবায় নামবে ভ্যাসেল দুটি।

new-ship

অন্যদিকে রাত্রিকালীন সার্ভিসের জন্য ঢাকার হাসনাবাদ বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে অ্যাডভেঞ্চার-১ লঞ্চের। গতকাল রোববার পরীক্ষামূলকভাবে বুড়িগঙ্গা নদীতে চালিয়ে দেখা হয়েছে লঞ্চটি। সবকিছু ঠিক থাকলে ঈদের আগেই অ্যাডভেঞ্চার-১ উদ্বোধনের জোর প্রচেষ্টা চলছে। চলাচল করবে ঢাকা-বরিশাল-ঝালকাঠি নৌপথে।

দক্ষিণাঞ্চলের নৌরুটে দিবা-রাত্রি সার্ভিসে লঞ্চ তিনটি চলাচল শুরু হলে এবারের ঈদে ঘরমুখী যাত্রীদের ভোগান্তি কিছুটা হলেও কমবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

নির্মাণকাজের তদারকির দায়িত্বে থাকা প্রকৌশলী মো. কামরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, বিশেষজ্ঞ নৌ-স্থপতির নকশায় সমুদ্র পরিবহন অধিদফতরের প্যানেল প্রকৌশলীদের তত্ত্বাবধানে লঞ্চ তিনটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে।

এর মধ্যে অ্যাডভেঞ্চার-১ লঞ্চটি অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর বিলাসবহুল লঞ্চ। দেড় সহস্রাধিক যাত্রী বহন করতে সক্ষম লঞ্চটি। ২৭০ ফিটের ওপরের দৈর্ঘ্যে এবং ৪৪ ফিট প্রস্থের লঞ্চটিতে থাকছে আড়াই শতাধিক কেবিন। যাত্রীদের আকৃষ্ট করতে ফুড কোড এরিয়া, কফি হাউজ এবং ওয়াইফাই সুবিধাসহ রাখা হচ্ছে বিনোদনের ব্যবস্থা। নিরাপত্তার জন্য পুরো নৌযানটি সিসি ক্যামেরা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। থাকবে একজন কমান্ডারসহ সহস্র আনসার সদস্য। এছাড়া ৩০০ টি লাইফ বয়া রাখা হয়েছে যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য।

new-ship

প্রকৌশলী মো. কামরুল ইসলাম বলেন, কীর্তনখোলা নদীর তীরে শিপ বিল্ডার্স লিমিটেডের ডক ইয়ার্ডে নির্মিত হয়েছে কাটারম্যান টাইপের দুইটি ভ্যাসেল। ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে দিনের বেলায় চলাচল করবে দুটি জাহাজ। সবগুলো জাহাজই নতুন লোহার পাত দিয়ে তৈরি। পাশাপাশি কাটারম্যান জাহাজ দুটির ইঞ্জিন, প্রপেলারসহ সার্বিক সবকিছুই নতুন আমদানি করা হয়েছে।

জাহাজ দুটিতে বিলাসবহুল স্লিপিং চেয়ারের পাশাপাশি, থাকছে দুইটি করে ভিআইপি কেবিন। যা দিবা সার্ভিসে অন্য কোনো নৌযানে নেই। এছাড়া যাত্রীদের একঘেয়ামি কাটাতে পুরো জাহাজের চারপাশে প্রশস্ত বারান্দা রাখা হয়েছে। আর খাবারের ক্যান্টিন তো থাকছেই। সবকিছু ঠিক থাকলে সরকারি নিয়ম মেনে ভ্যাসেল দুটি ৪ থেকে ৫ ঘণ্টার মধ্যে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেবে।

প্রকৌশলী মো. কামরুল ইসলাম বলেন, অ্যাডভেঞ্চার-৫ ও অ্যাডভেঞ্চার-৬ অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর বিলাসবহুল তিনতলা বিশিষ্ট দুটি ভ্যাসেল। প্রতিটি ভ্যাসেলের দৈর্ঘ্য ১৩০ ফিট করে। প্রস্থ ৪০ ফিট করে। যাত্রীদের জন্য থাকছে ইকোনমি, বিজনেজ ও প্রিমিয়াম ক্লাসের আসন। লঞ্চের নিচতলায় ইকোনমি জোনের সম্ভাব্য ভাড়া ৫০০ টাকা, দ্বিতীয় তলার বিজনেস ক্লাসের ভাড়া ৭০০ টাকা ও প্রিমিয়াম ক্লাসের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার টাকা। ভিআইপি কেবিনের ভাড়া ছয় হাজার ও ফ্যামিলি কেবিনের ভাড়া তিন হাজার টাকা সম্ভাব্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

new-ship

লঞ্চ তিনটির সার্ভে কাজ সম্পন্ন শেষে রুট পারমিটের অপেক্ষায় রয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে রুট পারমিট ও সময়সূচির অনুমোদন পায়া যাবে। অনুমোদন পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই অ্যাডভেঞ্চার-১, ৫ ও ৬ নামের জাহাজ তিনটি যাত্রীসেবা শুরু করবে।

নিজাম শিপিং লাইন লিমিটেড কোম্পানির মালিক ও মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি নিজাম উদ্দিন বলেন, বড় জাহাজের আদলে তৈরি হয়েছে লঞ্চ তিনটি। তৈরির সময়ই যাত্রী ও নৌযানের নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। প্রথম শ্রেণির কেবিনগুলো বানানো হয়েছে বিলাসবহুল আবাসিক তিন তারকা হোটেলের আদলে। ব্যয়বহুল ও দৃষ্টিনন্দন আসবাবপত্রে সাজানো প্রতিটি কক্ষ। প্রতিটি কেবিনের সঙ্গে রয়েছে সুবিশাল বারান্দা। এখানে বসে নদী, আকাশ আর আশপাশের মনোরম প্রকৃতি দেখার ব্যবস্থা রয়েছে। কক্ষের ভেতরে রয়েছে স্যাটেলাইট টিভি সংযোগ। রিভার সাইটের কেবিনের ভেতর থেকেও সহজেই দেখা যায় বাইরের নয়নাভিরাম দৃশ্যাবলি।

এএম/জেআইএম

আরও পড়ুন