চকরিয়ায় গাছচাপায় ২ জনের মৃত্যু
ঘূর্ণিঝড় মোরার আঘাতে কক্সবাজারের চকরিয়ায় গাছচাপায় দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন- সায়রা খাতুন (৬৫) ও রহমত উল্লাহ (৫০)।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক আলী হোসেন জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সায়রা খাতুন চকরিয়ার সিকদার পাড়া এলাকার নুরুল আলমের স্ত্রী। রহমত উল্লাহ ধোলা হাজারা এলাকার বাসিন্দা।
এছাড়া মোরার আঘাতে এখন পর্যন্ত ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে, কক্সবাজার শহরের একটি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া মরিয়ম বেগম (৫৫) নামে এক বৃদ্ধা হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তার স্বামীর নাম বদিউল আলম। এছাড়া আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেলেও এর সত্যতা কেউ নিশ্চিত করেননি।
জেলা প্রশাসক জানান, ঝড়ের তাণ্ডবে বিধ্বস্ত হয়েছে জেলার অসংখ্য ঘরবাড়ি; উপড়ে পড়েছে অসংখ্য গাছপালা।
ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটারের বেশি গতির বাতাস নিয়ে মঙ্গলবার ভোর ৬টার দিকে জেলার কুতুবদিয়ার কাছ দিয়ে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করে চট্টগ্রামের দিকে রওনা হয় ঘূর্ণিঝড়টি। সেই থেকে অসংখ্য ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হওয়ার খবর আসছে প্রতিনিয়ত।
জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, শুধু কক্সবাজার পৌর এলাকায়ই সহস্রাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। কিছু আংশিক, কিছু সম্পূর্ণ। অসংখ্য গাছপালা উপড়ে পড়েছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নূর আহম্মদ বলেন, এ ইউনিয়নে দেড় শতাধিক বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। অনেক জায়গায় গাছপালা উপড়ে গেছে।
এদিকে টেকনাফ উপজেলায় মোবাইল নেটওয়ার্কে বিপর্যয় ঘটেছে বলে ধারণা করছেন জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন।
তিনি বলেন, টেকনাফের কোনো মোবাইল অপারেটরেই কারও মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। ধারণা করা হচ্ছে মোবাইল নেটওয়ার্কে বিপর্যয় ঘটেছে।
কক্সবাজার বিমানবন্দরে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ এ কে এম নাজমুল হক বলেন, ভোর ৬টার দিকে কক্সবাজার উপকূলে আঘাত হানে মোরা। তার আগে থেকেই বৃষ্টিপাত হচ্ছে, কখনও হালকা, কখনও মাঝারি।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম জয় জানিয়েছেন, এ জেলায় ৫৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্রে দুই লাখের অধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তাদের পর্যাপ্ত খাবার সরবরাহ করা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, উপকূলীয় এলাকার দুই লক্ষাধিক মানুষকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। খুলে দেয়া হয়েছে জেলার ৫৩৮টি আশ্রয়কেন্দ্র। গঠন করা হয়েছে ৮৮টি মেডিকেল টিম। প্রস্তুত রাখা হয়েছে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির আওতায় ৪১৪টি ইউনিটের ছয় হাজার স্বেচ্ছাসেবক ও রেড ক্রিসেন্টের ১৫ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। আশ্রয়কেন্দ্রে আসা লোকজনের নিরাপত্তার পাশাপাশি নেওয়া হয়েছে খাদ্য সরবরাহেরও ব্যবস্থা।
এমএআর/এআরএস/জেআইএম