ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

এখনও স্বল্প মূল্যে সেবা দেন পাঁচপাই ডাক্তার

প্রকাশিত: ০৯:৫২ এএম, ২৭ মে ২০১৭

চিকিৎসার ফি হিসেবে রোগীর কাছ থেকে মাত্র পাঁচ পয়সা নেয়ায় সবাই তাকে চেনে পাঁচপাই (পয়সা) ডাক্তার হিসেবে। নিজ জেলা ছাড়াও আশপাশের জেলার অনেকেই পাঁচপাই ডাক্তার হিসেবে চেনেন নুরুল ইসলাম সরকারকে।

গাইবান্ধা জেলা শহরের পুরনো বাজারে নিজস্ব চিকিৎসালয়ে তিনি রোগীদের নিয়মিত হোমিও চিকিৎসা দেন। প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন তার কাছে চিকিৎসা নিতে। মানুষ পাঁচপাই ডাক্তার বলে ডাকায় এই নাম নিয়ে গর্ববোধও করেন নুরুল ইসলাম সরকার।

Pachpai

নুরুল ইসলাম সরকারের বাড়ি গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের পশ্চিম কোমরনই গ্রামে। ১৯২৯ সালে এ গ্রামেই জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১৯৫০ সালে মেট্রিকুলেশন পাস করেন তিনি। এরপর চাকরি করেন একটি কাপড়ের দোকানে। ১৯৬৭ সালে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। তার পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়ে। স্ত্রী জমিলা বেগম গৃহিণী।

১৯৬৮ সালে প্রথম এক পুরিয়া ওষুধের দাম পাঁচ পয়সা নিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন নুরুল ইসলাম সরকার। তার চিকিৎসায় মানুষ দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠলে সুনাম ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে। আর তখন থেকেই জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে মানুষ ছুটে আসে চিকিৎসা নিতে। এখনও রোগীদের ভিড় জমে চিকিৎসালয়ের সামনে।

Pachpai

বুধবার দুপুরে তার চিকিৎসালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, শিশু, নারী, পুরুষ ও বৃদ্ধদের উপচেপড়া ভিড়। কেউবা দাঁড়িয়ে আবার কেউবা বসে আছেন। রোগীর কাছ থেকে রোগের বর্ণনা শুনে রোগ নির্ণয় করে একটি কাগজে ওষুধের নাম লিখছেন হোমিও চিকিৎসক নুরুল ইসলাম সরকার। পরে সেই কাগজ দেখে তার সহকারীরা ওষুধ তৈরি করে রোগীর হাতে দিচ্ছেন।

শহরের দক্ষিণ ধানঘড়া এলাকার খলিল উদ্দিন (৫৫) জাগো নিউজকে বলেন, আমার মা গলায় ভাত আটকে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম। তারা রংপুর মেডিকেলে নিয়ে যেতে পরামর্শ দিলেন। পরে মাকে পাঁচপাই ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই। তার দেয়া দুই পুরিয়া ওষুধ খেয়েই মা সুস্থ হয়ে ওঠেন।

শহরের সুখনগর এলাকার সুমন মিয়া (৩২) বলেন, কোনো অসুখে আক্রান্ত হলেই বাবা পাঁচপাই ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতেন। ছোটবেলা থেকেই আমি ও আমার অন্যান্য ভাই-বোন তার চিকিৎসা গ্রহণ করছি। আমার সন্তান অসুস্থ হলে তাকেও পাঁচপাই ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই। তার চিকিৎসায় আমরা সন্তুষ্ট।

Pachpai-Doctor

নুরুল ইসলাম সরকারের চিকিৎসালয়ের সহকারী রনি মিয়া বলেন, চেম্বার খোলার আগেই জেলা সদর, সুন্দরগঞ্জ, সাদুল্লাপুর ও ফুলছড়ি থেকে প্রতিদিন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীরা আসেন। তার চিকিৎসার সুনাম এখন জেলাজুড়ে।

এভাবে প্রতিদিনই প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০ জন রোগীর চিকিৎসা দিয়ে চলেছেন তিনি। এতে ওষুধের দাম ছাড়া কোনো ফি নেয়া হয় না। বর্তমানে ওষুধের দাম দুই থেকে পনের টাকা করে নেন তিনি। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বেলা সোয়া ১টা এবং বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত রোগী দেখেন নুরুল ইসলাম সরকার।

নুরুল ইসলাম সরকার বলেন, ১৯৬৮ সাল থেকে চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও নিজের চেষ্টা ও বই পড়ে চিকিৎসক হয়েছি। যতদিন বেঁচে থাকব, মানুষকে সেবা দিয়ে যাব।

এমএএস/জেআইএম