মীরগঞ্জের রেশম শ্রমিকদের মানবেতর জীবন
দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার মীরগঞ্জের রেশম শ্রমিকরা। দৈনিক মজুরি ভিত্তিক শ্রমিকদের মাসের বেশিরভাগ সময়ই কাজ থাকে না। অলস বসে থাকতে হয়। এর উপর খাড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে শ্রমিক ছাটাইয়ের ঘটনা। এতে শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে বীজাগারে। এ বিষয়ে শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে সরকারের বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করেও সুফল পাচ্ছন না তারা। বিভিন্ন সময় মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করলেও সরকারের নজরে আসেনি রেশম বীজাগারের শ্রমিকদের সমস্যা।
সূত্র জানায়, মীরগঞ্জ রেশম বীজাগারের প্রায় দেড় শতাধিক শ্রমিক ২ যুগেরও বেশি সময় ধরে দৈনিক ২৬০ টাকা মজুরিতে কাজ শুরু করে আসছেন। প্রথম প্রথম মাসের বেশিরভাগ সময় কাজ থাকলেও দিনে দিনে কাজ কমতে থাকে। মাসের একটা দীর্ঘ সময় কাজ না থাকায় অলস সময় পার করতে হয় শ্রমিকদের। অপর দিকে শ্রমিকের প্রয়োজন নেই এমন অজুহাতে শ্রমিক ছাটাই করে এখন তা নামিয়ে আনা হয়েছে মাত্র ৪৯ জনে। আবার এই ৪৯ জন শ্রমিক মাসে ১৪ থেকে ১৫ দিন কাজ করলেও বাকি সময় তাদের দেয়া হয় না কাজ।
আর এতে করে শ্রমিকদের সংসার চালাতে গিয়ে তারা ঋণের জালে বন্দি হয়ে পড়ছেন। দেখা দিচ্ছে শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ। ফলে শ্রমিকরা তাদের দাবি-দাওয়া বাস্তবায়নের লক্ষ্যে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি দীর্ঘদিন ধরে পালন করে আসলেও বাস্তবায়ন ঘটেনি। রেশম শিল্পের নাম এখন শুধু বইয়ের পাতায় সীমাবদ্ধ।
মীরগঞ্জ রেশম বীজাগার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সিরাজ জাগো নিউজকে জানান, শ্রমিকরা ইতোমধ্যে ৬ দফা দাবি জানিয়ে সরকারের বিভিন্ন দফতরে লিখিত অভিযোগ করলেও কোন সুফল পাইনি। এর আগে গত রোববার শত শত শ্রমিকদের সঙ্গে নিয়ে মীরগঞ্জ মোড়ে মানবন্ধন পালন করেছেন তারা। ওই মানববন্ধনে সরকারের কাছে ৬ দফা পূরণসহ সরকারি সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টির জন্য আবেদন জানানো হয়েছে।
তিনি বলেন, রেশম শিল্পকে বাঁচাতে হলে শ্রমিকদের নায্য অধিকার বুঝিয়ে দিতে হবে। তাদের শোষণ করে এই শিল্পের বিকাশ সম্ভব হবে না। উত্তারাঞ্চলের এই ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রাখতে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।
শাহরিয়ার অনতু/এমজেড/এমএস