বাঘ নয়, বাঘদাসা
ছয়দিন ঢাকায় অবস্থান করে শনিবার দুপুরে স্বস্ত্রীক বাড়ি ফেরেন পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানির সহকারী ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম। সিরাজগঞ্জ শহরের মোক্তারপাড়া মহল্লার বাড়ির দরজায় তালা খুলে ভেতরে ঢুকতে চাইলেই শঙ্কিত হয়ে পড়েন তিনি। কে যেন ভেতর থেকে হাতের তালা (হ্যান্ডলক) বন্ধ করে রেখেছেন। বাড়ির মালিকের কাছ থেকে বাড়তি চাবি দিয়ে তালাবদ্ধ কক্ষের ভেতরে ঢুকেই চমকে যান ওই দম্পতি। পুরো ঘরের আসবাবপত্র তছনছ, বিছানা লণ্ডভণ্ড, ফ্রিজের ঢাকনা খোলাসহ ঘরের সমস্ত দরজা, জানালা আর দেয়ালে অজানা কোন জন্তুর পায়ের ছাপ। চিহ্ন দেখে মনেই হচ্ছে এটা বাঘ শাবকের পায়ের ছাপ।
আরো উৎকণ্ঠিত ওই দম্পতির মধ্যে শঙ্কা জাগে ঘরে বাঘ ঢুকলো কী করে? আবার এও ভাবে চোরের কবলে পড়ে সর্বশান্ত হতে হয়নিতো তাদের! কিন্তু ড্রয়ারের তালা খুলে স্বস্তি মেলে যে, চোর আসেনি। তখন অজানা প্রাণির আতঙ্ক জেকে বসে তাদের ভেতর। চিৎকার শুরু করলে অন্যান্য বাড়ির লোকজনসহ এলাকাবাসী এসে জড়ো হন ঘরে। অনেকেই পায়ের ছাপ দেখে মন্তব্য করেন বাঘের ছানা। সতর্ক লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে বাড়ি জুড়ে তল্লাশি চালালেও কোথাও কিছু পাওয়া যায়নি। এক পর্যায়ে চোখে পড়ে ঘরে থাকা ডিপ ফ্রিজের মধ্যে। সেখাসে বসে হিংস্র চোখে তাকিয়ে আছে একটি বাঘ সদৃশ প্রাণি। জ্বলজ্বলে চোখ আর হিংস্রতা নিয়ে আক্রমণ চালাতে পারে ভেবে তড়িঘড়ি করে ফ্রিজের ঢাকনা বন্ধ করে দেয়া হয়। বিপত্তি বাধে সেখানেও। দম বন্ধ হয়ে প্রাণিটি মারা গেলে আইনি জটিলতা দেখা দিতে পারে। যে কারণে তড়িঘড়ি করে খবর দেয়া হয় পুলিশসহ স্থানীয় কর্মকর্তাকে।
স্থানীয় বন্য প্রাণি ও জীব বৈচিত্র সংরক্ষণ কর্মকর্তা ইব্রাহীম খলিল ঘটনাস্থলে এসে জানালেন, প্রাণিটি বাঘ নয়। এটি বাঘদাসা বা গন্ধ গোকূল। এরপর বাঘদাসাটিকে বস্তাবন্দী করে বিকেলে বঙ্গবন্ধু ইকোপার্কে অবমুক্ত করা হয়।
বাড়ির মালিক সাবেক ব্যাংক কর্মকর্তা শওকত আলী জাগো নিউজকে জানান, প্রাণিটি গত ৬ দিন ঘরের মধ্যে অবরুদ্ধ থাকায় ঘরজুড়ে এই তাণ্ডব চালিয়েছে। ফ্রিজে রক্ষিত খাবার খেয়েই সে এ কয়েকদিন পার করেছে।
বাদল ভৌমিক/এমজেড/আরআইপি