ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ধানের বাম্পার ফলন : হাসি নেই কৃষকের মুখে

প্রকাশিত: ০৫:১৫ এএম, ০৭ মে ২০১৫

যশোর অঞ্চলে ধানের বাম্পার ফলনে কৃষকের আঙিনা হাসলেও হাসি নেই কৃষকের মুখে। কঠোর পরিশ্রম করে ফলানো সোনার ধানের দর নেই বাজারে। আর এতেই মাথায় হাত উঠেছে কৃষকের। এদিকে মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের এ দুরাবস্থা উল্লেখ করে প্রতি মণ ধানের নূন্যতম দাম এক হাজার টাকা করার দাবি জানিয়ে খাদ্যমন্ত্রীকে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে।

যশোরাঞ্চলে ধানের বড় বাজার শহরতলীর পুলেরহাট বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মাহিদিয়া, রূপদিয়া, সাড়াপোল, পতেঙ্গালী, মালঞ্চি, চাঁচড়াসহ বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা নসিমন ও ভ্যানযোগে ধান নিয়ে বিক্রির জন্য এই মোকামে আসছেন। কিন্তু বাজারে ধানের দাম শুনে তাদের চোখ কপালে উঠছে। বর্তমানে যশোরে প্রতি মণ মোটা ধান বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ থেকে ৫৪০ টাকা। আর চিকন ধান ৬৮০ থেকে ৭৪০ টাকা।

হাটে ধান বিক্রি করতে আসা যশোর সদর উপজেলার পতেঙ্গালী গ্রামের কৃষক শফিকুল ইসলাম জানান, দুই বিঘা জমি বর্গা নিয়ে ধান চাষ করে তিনি ৩৬ মণ মিনিকেট (জিরে) ধান পেয়েছেন। এ ধান আড়তে ৭৪০ টাকা দরে বিক্রি করে ২৬ হাজার ৬৪০ টাকা পাচ্ছেন। অথচ বর্গার টাকাসহ চাষে তার খরচ ৩০ হাজার টাকা ছাড়িয়ে গেছে।

মাহিদিয়ার কৃষক আহমদ গাজী জানান, ৩ বিঘা জমিতে তিনি স্বর্ণলতা ধান চাষ করে বিঘা প্রতি ১৮ মণ ফলন পেয়েছেন। বাজারে এ ধান ৭১০ টাকা মণ বিক্রি হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘খরচ করে ধান চাষ করে বাজারে এসে মানুষের হাত পা ধরতে হচ্ছে বিক্রির জন্য। নিজের জমি তাই বাঁচা। আর ধান চাষ করব না। এবার জমি বর্গা দিয়ে দেব।’

এ বাজারে ধান বিক্রি করতে আসা আব্দুল আজিজ, আইয়ুব গাজীসহ আরো অনেক কৃষক দাবি করেন, বিঘা প্রতি এবার কৃষককে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে।

এদিকে, মহিদিয়া বাজারে ধানের বাজারে একই রকম হতাশা ব্যক্ত করেন কৃষকরা। এ বাজারে কথা হয় ইদ্রিস আলীর সাথে। তিনি সাড়ে তিন বিঘা পাঞ্জাব মিনিকেট চাষ করেছিলেন। বিঘা প্রতি তার খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকার উপরে। প্রতি বিঘায় ফলন হয়েছে ১৬ মণ। বাজারে এ ধান বিক্রি করে বিঘায় ১০ হাজার টাকাও উঠছে না।

যদিও ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে গত ৩ এপ্রিল ধানের দাম নির্ধারণ করেছে সরকার। সেই অনুযায়ী ১ মে থেকে সরকার ৮৮০ টাকা দরে ধান সংগ্রহ শুরু করেছে। পাশাপাশি সরকার সম্প্রতি ভারত থেকে চাল আমদানির উপর শুল্ক আরোপ করেছে। তবে এখন পর্যন্ত বাজারে এর কোনো প্রভাব পড়েনি।

এদিকে ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে যশোরে বিভিন্ন সামাজিক, রাজনৈতিক ও কৃষক সংগঠনের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে দাবি জানানো হয়েছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ কৃষক সমিতির যশোর সদর উপজেলা শাখা খাদ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। এর আগে বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ধানের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করতে মধ্যস্বত্বভোগীদের বাদ দিয়ে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের দাবি জানান।

মিলন রহমান/এসএস/পিআর