গ্রাহকদের ১০ কোটি টাকা আমানত নিয়ে উধাও এনজিও
পটুয়াখালীতে জামায়াত-শিবির ঘরানার আর্থিক প্রতিষ্ঠান আরডিপি গ্রাহকদের প্রায় ১০ কোটি টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে।
সোমবার (০৪-মে) গ্রাহকদের আমানত ফেরৎ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অফিস তালাবদ্ধ করে আত্মগোপনে চলে যান এর কর্মকর্তারা। এর আগে একইভাবে এ প্রতিষ্ঠানের গলাচিপা, দশমিনা ও বাউফল উপজেলা থেকেও প্রতিষ্ঠানটির শাখার কর্মকর্তারা উধাও হয় বলে অভিযোগে জানা গেছে।
এদিকে, আমানত নিয়ে প্রতিষ্ঠানটি সটকে পড়ায় পথে বসেছেন এর শত শত গ্রাহক। মঙ্গলবার সকালে তালাবদ্ধ ওই অফিসের সামনে গ্রাহকদের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরডিপি’র এক কর্মকর্তা ও এক কর্মচারীকে পুলিশ আটক করলেও এখনো পর্যন্ত গ্রাহকরা কোন আশার খবর পাননি।
পটুয়াখালী শহরের সদর রোডে পুরাতন আদালতের সামনে গাজী ভবনের তৃতীয় তলা ভাড়া নিয়ে ২০১২ সালের জুন মাসে পটুয়াখালী শাখার আর্থিক কার্যক্রম শুরু করে জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে সম্পর্কিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ‘আরডিপি ফাইন্যান্স এন্ড ইনভেস্টমেন্ট এমসিএস লিমিটেড’। প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ইব্রাহীম খলিল নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রশিবিরের প্রাক্তন সভাপতি বলে জানা গেছে। এ ছাড়া এ প্রতিষ্ঠানের চাকুরেদের অধিকাংশই শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। প্রায় তিন বছর ধরে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকার আমানত হাতিয়ে নিয়েছে তারা।
সদর রোডস্থ চশমার দোকানী জাকির হোসেন জানান, ওই প্রতিষ্ঠানে তার চার লাখ বিশ হাজার টাকা রয়েছে। একইভাবে মনির হোসেন ও ইমাম আহমেদসহ একাধিক গ্রাহক জানান, তাদের টাকা খোয়া যাওয়ার কথা। তারা বলেন, এই প্রতিষ্ঠানটি শুরু থেকেই শহরের ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে গ্রামের সাধারণ মানুষকে আমানতের বিপরীতে লোভনীয় সুবিধা দেবার কথা বলে আমানত সংগ্রহ করে। প্রতি লাখে মাসে এক হাজার ৮০০ টাকা লাভের প্রলোভন দেওয়া হয়। আর ধর্মপ্রিয় মানুষকে আকৃষ্ট করতে সাঁটানো হয় ‘ইসলামী শরিয়াহ’র তকমা।
জমানো অর্থ ফেরৎ পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চাইছেন ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহকরা। তবে দুইজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের কথা পটুয়াখালী সদর থানা স্বীকার করলেও, বিস্তারিত জানাতে অপারগতা প্রকাশ করে। আটককৃতদের মধ্যে পটুয়াখালী শাখার ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপক রাশেদুল হক ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী আলামীন বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে রয়েছে।
শেষ খবর পর্যন্ত এ ঘটনায় গ্রাহকদের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
এসআরজে