জঙ্গি আস্তানায় ১১ শাক্তিশালী বোমা
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপহেলার হাবাসপুরের জঙ্গি আস্তানা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে ১১টি শক্তিশালী বোমা। অভিযানের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বোমাগুলো উদ্ধার করা হয়। ঢাকা থেকে আসা পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল বোমাগুলো উদ্ধার করে। এসময় আস্তানা থেকে ১টি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমিত চৌধুরী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দ্বিতীয় দফা অভিযানে বাড়িটিতে কোনো জঙ্গি মেলেনি। তবে সেখান থেকে ১১টি শক্তশালী বোমা পাওয়া গেছে। বাড়িটির চারটি ঘরের ভেতর বোমাগুলি রাখা ছিল। দ্রুত বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল সেগুলো নিষ্ক্রিয় করে।
ওই বাড়ি থেকে ১টি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধারের কথাও জানান তিনি। অভিযান প্রায় শেষ পর্যায়ে। পরে এ নিয়ে বিস্তারিত জানানো হবে বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।
শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে দ্বিতীয় দিনের `অপারেশন সান ডেভিল` শুরু হয়। এ বিশেষ অভিযানে অংশ নেয় পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল, সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ও স্থানীয় পুলিশ।
এদিকে, নিহত পাঁচ জঙ্গির মরদেহ উদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মারা যাওয়ার ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে পুলিশের একটি দল সুইপার নিয়ে মরদেহগুলো উদ্ধার শুরু করে। দীর্ঘসময় কেটে নেয়া ধান খেতেই পড়েছিলো মরদেহগুলো। বৃহস্পতিবার মাঝে হাল্কা বৃষ্টিও হয়েছে। এতে পচন ধরতে শুরু করেছে মরদেহে।
জঙ্গি আস্তানার চারপাশে এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে এখনও ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। এর আগে সকাল ৮টার দিকে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্যকে গাড়ি করে এসে আস্তানার দিকে যেতে দেখা যায়। রাতে আস্তানা ঘিরে রাখা পুলিশ সদস্যরা ডিউটি বদলে ফিরে যান।
গত বুধবার রাত একটা থেকে এই অভিযান শুরু হয়। বৃহস্পতিবার পৌনে আটটার দিকে ওই আস্তানা থেকে কয়েকজন নারী-পুরুষ হঠাৎ বেরিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করে। এক পর্যায়ে তারা আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটায়।
এতে পাঁচ জঙ্গি সাজ্জাদ হোসেন (৫০), তার স্ত্রী বেলি আক্তার (৪৫), ছেলে আল-আমিন (২৫), মেয়ে কারিমা খাতুন (১৭) ও বহিরাগত যুবক আশরাফুল (২৫)। এসময় জঙ্গিরা মারাত্মক ভাবে কুপিয়ে যখম করে দমকল কর্মী আব্দুল মতিনকে। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে মারা যান মতিন। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটার দিকে স্থানীয় গোরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়।
পুলিশ বলছে, সাজ্জাদ ও তার স্ত্রী বেলী আক্তার কুপিয়ে হত্যা করেছেন দমকল কর্মী আব্দুল মতিনকে। আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন অন্যরা। এ সময় সাজ্জাদের আরেক মেয়ে সুমাইয়া দুই ছেলে মেয়ে নিয়ে বসে তা দেখছিলেন। এর তিন ঘণ্টা পর তিনি আত্মসমর্পণ করেন। বর্তমানে এই তিনজন গোদাগাড়ী মডেল থানায়।
ফেরদৌস সিদ্দিক/এফএ/এমএস