ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

করলার গ্রাম খরসতি

প্রকাশিত: ০৭:১০ এএম, ৩০ এপ্রিল ২০১৫

প্রতিদিন ভোরের সূর্য উঠার পর পরই ক্ষেতে চলে করলা তোলার মহা উৎসব। ক্ষেত থেকে করলা তোলার পর সারি সারি ডালি নিয়ে কৃষকরা হাজির হয় স্থানীয় খরসতি ঈদগাহ মাঠে। আর এখানেই বসে বিশাল হাট। বলা হচ্ছে সবজি গ্রামখ্যাত নাটোরের সিংড়া উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের খরসতি গ্রামের কথা।

এ গ্রামে এখন নারী, পুরুষ, বৃদ্ধ সবার মাঝে বইছে সবুজের আনন্দ। গ্রাম জুড়ে করলার সমারোহ। ইতোমধ্যে করলার গ্রাম হিসেবে এর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে। বিভিন্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা এখানে এসে করলা পাইকারি কিনে নিয়ে যায়। প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার মণ করলা এখান থেকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে চলে যায়। অথচ বাম্পার ফলন হলেও উৎপাদিত করলার ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন চাষিরা।

উপজেলা কৃষি অধিদফতরের তথ্যানুযায়ী, উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৭০ হেক্টর জমিতে করলার চাষ হয়েছে। এর মধ্যে খরসতি গ্রামেই ২৫ হেক্টর জমিতে করলার আবাদ হয়েছে। এ বছর করলা আবাদে উৎপাদিত ফসলের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৪০ মেট্টিক টন। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে উপজেলা কৃষি অধিদফতর।



করলা চাষি সুমন, বাবু এবং শফিকুল জানান, এ গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ সবজি চাষ করে। এর মধ্যে শতকরা ৯৫ জন করলা চাষ করে। করলা ছাড়াও কুমড়া, মরিচ, লাউ, ভূট্টাসহ নানা সবজি চাষ করে থাকে। পরিচর্যা ও কিটনাশকসহ প্রতি বিঘা জমিতে করলা আবাদ করতে ১২ থেকে ১৪ হাজার টাকা খরচ হয়। ভালো মানের করলা হলে ৪৫ থেকে ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করা সম্ভব। কিন্তু এ এলাকায় যাতায়াত ব্যবস্থা না থাকার কারণে অর্ধেক দামে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে করলা বিক্রি করতে হয়। অনেক সময় পাইকারি ব্যবসায়ীরা না আসায় ক্ষেতের করলা ক্ষেতেই পঁচে নষ্ট হয়ে যায়।

বগুড়ার পাইকারি ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান এবং নওগাঁর মজিবর রহমান মনজু জাগো নিউজকে বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় অনেক পাইকারি ব্যবসায়ীরা এখানে আসতে চায় না। এছাড়া যাতায়াত খরচ বেড়ে যাওয়ার কারণে মণ প্রতি দেড় থেকে দুইশত টাকা কম দামে কৃষকদের কাছ থেকে পণ্য কিনতে হয়। মাত্র তিন কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণ হলে এখানেও ভালো হাট গড়ে উঠবে। এতে করে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য পাবে।

তাজপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আব্দুল কুদ্দুস জাগো নিউজ বলেন, এ গ্রামের প্রায় সবাই সবজির আবাদের সাথে জড়িত। কিন্তু, সিংড়া উপজেলা সদর থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে এ গ্রামে যানবহন নিয়ে আসতে মানুষেরা ভয় পায়। বাম্পার ফলন হলেও রাস্তার বেহাল দশার কারণে কৃষকরাও ন্যায্য মূল্য পাচ্ছে না।



সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় উপজেলায় তুলনামূলক বেশি করলার চাষ হয়েছে। কৃষকরা যেন তাদের উৎপাদিত পণ্যের ন্যায্য মূল্য পায় সেই ব্যাপারে উদ্যোগ নেয়া হবে।

এসএস/এমএএস/আরআই