নেত্রকোনায় ৫৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল প্লাবিত
প্রবল বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার হাওর উপজেলাগুলো ছাড়াও এখন উজানের এলাকাগুলোতে বোরো ফসল তলিয়ে যাচ্ছে।
গত তিনদিনে বারহাট্টা আটপাড়া, কেন্দুয়া, নেত্রকোনা সদর ও পূর্বধলা উপজেলার পায় ৫ হাজার হেক্টর জমির বোরো পানিতে তলিয়ে গেছে। তবে সরকারি হিসাবে এর পরিমাণ প্রায় ৭ হাজার হেক্টর। সব মিলে জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত বোরো জমির পরিমাণ হচ্ছে ৫৪ হাজার হেক্টর।
এদিকে ভয়ে আতঙ্কে উজানের উঁচু এলাকার কৃষকরা বিনষ্ট হবার আশঙ্কায় আধাপাকা ধানও কেটে ফেলতে বাধ্য হচ্ছেন। সার্বিকভাবে নেত্রকোনার বোরো চাষিরা এখন নানান সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছেন। সরকার যে পরিমাণ সাহার্য প্রদান করছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম।
খোলা বাজারে চাল ও আটা বিক্রয় হলেও হাওর এলাকায় ডিলারের সংখ্যা বাড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে তাদের ক্রয় ক্ষমতার জন্য কাজের দাবি জানানো হয়েছে।
এদিকে মদন উপজেলায় ছোট বড় ২৫টি বিল ও হাওরে নতুন করে পানি ডুকে পড়ায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়ছে। আবারও নতুন নতুন এলাকায় ফসলি জমি ডুবে যাচ্ছে।
শনিবার সকাল পর্যন্ত এসব বিল ও হাওরে দুই ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এরং বিল,পাতুনিয়ার হাওর, বিয়াসীর সামনের হাওর, জালিয়ার হাওর, গনেশের হাওর, ধান কুনিয়ার পিছনের হাওর, বালালীর সামনে তলার হাওর, কুলিয়াটির ছয় বুরিয়া হাওর, হাতির বিল রুপসির হাওর, দীঘার বিল, ঘোড়া দীঘার হাওর, মহরির বিল, হুহুন বিল, স্লুইজ গেটের ভেতরের হাওর, হিংগা বিল, বারুক বিল, হুন্দা বিলে নতুন করে পানি ঢোকায় নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
সরকারি হিসাবে এ পর্যন্ত উপজেলার ৮ ইউনিয়নে ১৬ হাজার কৃষক পরিবারের ৭ হাজার ৫শ হেক্টর জমির ইরি বোরো ধান তলিয়ে সম্পূর্ণ ফসল ক্ষতি হয়েছে।
উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নাসরিন আক্তার জাগো নিউজকে জানান, প্রতিদিনেই নতুন নতুন এলাকায় পানি প্রবেশের খবর পাওয়া যাচ্ছে। এলাকা পরিদর্শন করে কৃষকদের স্বান্তনা দিচ্ছি। তিনি মদন উপজেলাকে দুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানান তিনি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওয়ালীউল হাসান জাগো নিউজকে জানান, প্রতিদিনই ক্ষতির পরিমাণ বাড়ছে এবং এ অবস্থার মনিটরিং করছি। কৃষি বিভাগ ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ নিরূপন করছে।
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক ড. মো. মুশফিকুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, গত তিনদিনে জেলার কেন্দুয়া, মদন মোহনগঞ্জ এবং পূর্বধলার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।
তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে ৩২৭ মে.টন চাল ও নগদ ২১ লক্ষ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও জেলায় ৩৬ জন ডিলার নিয়োগ করে প্রতিদিন ১ টন চাল ও ১ টন আটা ১৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করা হচ্ছে।
কামাল হোসাইন/এমএএস/জেআইএম