মেহেরপুরে সাপ আতঙ্ক
মেহেরপুর সদর উপজেলার পুরাতন মদনাডাঙ্গা গ্রামে বিরাজ করছে সাপ আতঙ্ক। সাপের দেখা না মিললেও কিংবা বিষের জ্বালা তেমন অনুভব না হলেও প্রতিদিনই ২০-৩০ জন রোগী হাজির হচ্ছেন গ্রামের দু’জন ওঝার কাছে। এ সুযোগে প্রতারণার ফাঁদ পেতেছেন কথিত ওই ওঝারা। তারা সাপে কামড়ানো রোগীর শরীরে ব্লেড দিয়ে কেটে রক্ত বের করে অভিনব কায়দায় বিষ নামানোর নাটক করে হাতিয়ে নিচ্ছেন হাজার হাজার টাকা।
সপ্তাহখানেক আগে সাপে কামড়ানো এক ব্যক্তি মারা গেলে এ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এমন অবস্থায় রোগীদের হাসপাতালে আসার জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের পরামর্শ সত্ত্বেও গ্রামবাসী আটকে গেছে কুসংস্কার ও ওঝাদের ঝাড়ফুঁকের বেড়াজালে।
পুরাতন মদনাডাঙ্গা গ্রামে বুধবার সকালে সরেজমিন দেখা গেছে, গ্রামের লোকজনের চোখে-মুখে আতঙ্কের ছাপ। অনেকেই সাপ আতঙ্কে ঘুমাতে পারছেন না। গত চার দিনে শতাধিক মানুষকে সাপে দংশন করেছে বলে দাবি করেছেন ওই গ্রামের আসিফ চাঁদ ও হাসিনা খাতুনসহ অনেকে। তারাও ওঝার কাছে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে যাদের সাপে কেটেছে, তারাসহ গ্রামের কেউ সাপ দেখেননি। অদৃশ্য কোনো সাপ দংশন করছে বলে তাদের মনে ভ্রান্ত ধারণা বাসা বেঁধেছে।
অনেকে পেশাগত কর্মস্থলে যাওয়া বন্ধ করেছেন। আবার সাপ আতঙ্কে শিশুদের স্কুলেও যেতে দেওয়া হচ্ছে না। শিরনি বিলিয়ে সাপ থেকে মুক্তি কামনা করছেন কেউ কেউ। এদিকে গ্রামে গিয়ে লোকজনের সঙ্গে কথা বলে পাওয়া গেছে ওঝাদের চিকিৎসার বিচিত্র সব তথ্য। গাছের ডালের একটি অংশ যা থার্মোমিটার দাবি করে সর্প দংশনের রোগী শনাক্ত করছেন পুরান মদনাডাঙ্গা গ্রামের ওঝা সিরাজুল ইসলাম ও ইমাদুল ইসলাম। সাপে কামড় দেওয়ার সম্ভাব্য স্থানে ব্লেড দিয়ে কেটে ঝাঁঝরা করে বের করা হচ্ছে রক্ত। পরে আদিমযুগীয় কায়দায় ঝাড়ফুঁক দিয়ে খাইয়ে দেওয়া হচ্ছে গাছ-গাছড়ার রস।