বৃদ্ধা মাকে মারধর করে তাড়িয়ে দিল ছেলে!
লালমনিরহাটে বৃদ্ধা মাকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন ছেলে। ছেলের হাতে নির্যাতিত বৃদ্ধা আয়শা বেগম (৫৫) এখন হাসপাতালে চিকিসাৎধীন।
সোমবার বিকেলে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের বেডে শুয়ে অঝরে চোখের জল ফেলছেন ওই বৃদ্ধা।
ঘটনাটি ঘটেছে শুক্রবার সকালে সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের কোদালখাতা গ্রামে। দিনভর ওই বৃদ্ধা বাঁশঝাড়ের পাশে বসে শুধুই কাঁদছিলেন পরে এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসতাপতালে ভর্তি করেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কোদাল খাতা গ্রামের আমির উদ্দিনের স্ত্রী আয়শা বেগমকে (৫৫) তার পাষণ্ড ছেলে আশরাফুল মিয়া (৩৫) তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রায়ই মারধর করতেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে পারিবারিক বিষয় নিয়ে মায়ের সঙ্গে কথা কমবেশ হওয়ায় পাষণ্ড আশরাফুল মিয়া বাঁশের লাঠি দিয়ে আয়শা বেগমকে মারধর করে তার বাম পা ভেঙে দেন। এরপর বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয়।
এরপর শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে ওই বৃদ্ধাকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। আয়েমা বেগম দুই ছেলে আশরাফুল ইসলাম (৩৮) ও রাশেদুল ইসলাম (৩৩) এবং তিন কন্যা সন্তানের জননী।
হাসপাতালের বেডে অশ্রুসিক্ত বৃদ্ধা আয়েশা বেগম জানান, তার ত্রিশ শতাংশ জমির মধ্যে ২১ শতাংশ জমি দুই ছেলেকে দান করেছেন আর বাকি ৯ শতাংশ রেখেছেন নিজের ভবিষ্যতের জন্য। বড় ছেলে আশরাফুল ইসলাম দীর্ঘদিন অবশিষ্ট নয় শতাংশ জমি নিজের নামে লিখে নেয়ার জন্য আমাকে প্রতি দিনেই মারধর করেন। জমি তার নামে লিখে না দেয়ায় আমার পা ভেঙে দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আল্লার কাছে বিচার চেয়েছি আর তিনিই এর বিচার করবেন, এমন কুসন্তান যেন কোনো সংসারে না আসে। সে কোনো দিন সন্তান হতে পারে না, বৃদ্ধা মা কথাগুলো বলে কেঁদে ফেললেন।’
আয়েশা বেগমের বড় ভাই আহাদ আলী জানান, খবর পেয়ে তারা শুক্রবার সন্ধ্যায় এসে তার বোনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রহিম জানান, মায়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের জন্য তিনি কয়েক দফায় কাঠমিস্ত্রী আশরাফুলকে শাসিয়েছেন। মার চিকিৎসায় সার্বিক সহযোহিতা করা হচ্ছে।
সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আজমল হক জানালেন, আয়েশা বেগম দুই হাত,পা, পিঠ ও মাথায় আঘাত পেয়েছেন। তবে এখন তিনি শঙ্কামুক্ত।
রবিউল হাসান/এআরএ/জেআইএম