রাতেই জঙ্গি রিপনের ফাঁসি : কার্যকরে প্রস্তুত জল্লাদ
সিলেটে সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর হামলার মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হরকাতুল জিহাদ (হুজি) নেতা দেলোয়ার হোসেন রিপনের ফাঁসি আজ রাতেই। ফাঁসি কার্যকরে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার কর্তৃপক্ষ।
সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার সূত্রে জানা গেছে, ফাঁসি কার্যকরে জল্লাদ ফারুক ও জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে ১০ জনের একটি দল প্রস্তুত রাখা হয়েছে। নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে কারাগার ও আশপাশ এলাকায়।
বুধবার বিকেল পৌনে ৪টায় সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার আবু সায়েম জানান, সন্ধ্যার মধ্যে রিপনের পরিবারকে তার সঙ্গে শেষ দেখা করতে বলা হয়েছে।
এর আগে কারাগারে জ্যেষ্ঠ জেল সুপার জানিয়েছিলেন, উচ্চমহল থেকে বুধবার ফাঁসি কার্যকরে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। সকাল থেকেই সে অনুযায়ী কার্যক্রম শুরু হয়েছে। জল্লাদদের নিয়ে ফাঁসির মহড়াও দেয়া হয়েছে।
গত মঙ্গলবার সকালে রাষ্ট্রপতির কাছে করা রিপনের প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ সংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চিঠি সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছে। এরপর তা রিপনকে পড়ে শোনানো হয়। পরে দুপুরে কারাগারে এসে রিপনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তার বাবা আ. ইউসুফ ও মা আজিজুন্নেছা, ভাই নাজমুল ইসলাম ও তার স্ত্রী। আজ তারা আবার শেষবারের মতো সাক্ষাৎ করতে আসবেন।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটে হজরত শাহজালালের মাজার প্রাঙ্গণে ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন পুলিশের এএসআই কামাল উদ্দিন। এছাড়া হাসপাতালে নেয়ার পর মারা যান রুবেল আহমেদ ও হাবিল মিয়া। এ ঘটনায় আহত হন আনোয়ার চৌধুরী ও সিলেটের জেলা প্রশাসক আবুল হোসেনসহ অন্তত ৪০ জন।
এ মামলার রায়ে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের রায়ে হরকাতুল জিহাদের প্রধান মুফতি হান্নান, সাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন রিপনের ফাঁসির দণ্ডাদেশ দেয়া হয়। এ রায় আপিলেও বহাল থাকে।
আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামি রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করেন। তাদের আবেদন গত ১৯ মার্চ সর্বোচ্চ আদালতে খারিজ হয়ে যায়। এরপর এই তিন আসামি রাষ্ট্রপতির কাছে নিজেদের জঙ্গি স্বীকার করে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেন। কিন্তু রাষ্ট্রপতি তাদের আবেদন নাকচ করে দেন।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই শীর্ষ জঙ্গি হরকাতুল জিহাদের প্রধান মুফতি হান্নান ও তার সহযোগী সাহেদুল আলম ওরফে বিপুল গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে বন্দি রয়েছেন। তাদেরও আজ ফাঁসি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
ছামির মাহমুদ/এআরএ/জেআইএম