স্বামীকে লেখা স্ত্রীর শেষ চিরকুট
নওগাঁর মহাদেবপুর ও সাপাহার উপজেলায় পৃথক ঘটনায় দুই গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। সোমবার তাদের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এর মধ্যে এক গৃহবধূ তার স্বামীকে উদ্দেশ করে চিরকুট লিখেছেন, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। আমার নয়ন মনিকে বুকে ধরে রেখ, এটা আমার শেষ চাওয়া, ইতি তোমার স্ত্রী।’
তারা হলেন মহাদেবপুর উপজেলার রামনা-মধুপুর গ্রামের নিরঞ্জন বর্মণের মেয়ে চুমকি (১৬) এবং সাপাহার উপজেলা সদরের তাজপুর পূর্বপাড়া গ্রামের আফজাল হোসেনের স্ত্রী হোসনে আরা (২৫)।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নিরঞ্জন বর্মণের মেয়ে চুমকির সঙ্গে পাশের আলি দেওয়ান গ্রামের বিদ্যুৎ বর্মণের সঙ্গে বছর খানেক আগে বিয়ে হয়।
বিয়ের পর থেকে যৌতুকের ১ লাখ টাকার জন্য প্রায় নির্যাতন করত বিদ্যুৎ। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সোমবার বেলা ১১টার দিকে বাড়ির সবার অজান্তে ঘরের মধ্যে বিষপান করে আত্মহত্যা করে।
মহাদেবপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, মরদেহ উদ্ধারের জন্য দুপুরে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
অপরদিকে, জেলা সাপাহারে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে গৃহবধূ হোসনে আরা। জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো গৃহবধূ হোসনে আরা গ্রামের ব্র্যাক প্রাক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মেয়ে রাজিয়া খাতুনকে পৌঁছে দিয়ে বাড়িতে আসেন।
এরপর সকলের অজান্তে শয়ন ঘরের তীরের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে স্কুল ছুটির পর মেয়ে রাজিয়া বাড়ি ফিরে দরজা বন্ধ পেয়ে ডাকাডাকি শুরু করেন।
প্রতিবেশিরা এসে ঘরের দরজা ভেঙে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় দেখে থানা পুলিশে সংবাদ দেয়। এ সময় ঘরের মধ্যে খাটের উপর সাদা কাগজে লেখা একটি চিরকুট পাওয়া যায়।
তাতে তার স্বামীকে উদ্দেশ্য করে লেখা ছিল ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়। স্বামী আমার কাছে ফেরেস্তার মতো। পারলে ওগো তুমি আমায় ক্ষমা করে দিও। আর আমার বাবা মাকে তুমি ঠিক আগের মতো দেখবে তাহলেই আমি শান্তি পাব। আমার নয়ন মনিকে বুকে ধরে রেখ, শেষ চাওয়া ইতি তোমার স্ত্রী।’
সাপাহার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল ইসলাম বলেন, সংবাদ পেয়ে দুপুরে গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
আব্বাস আলী/এএম/আরআইপি