বরিশাল ‘মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র’ নির্মাণে বাঁধা!
বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার চরাদী ইউনিয়নের মকিমাবাদে ক্ষমতাসীন দলের এক পক্ষের বাঁধার মুখে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জনান, উপজেলার প্রত্যন্ত চরাদী, দুধল, দাড়িয়াল ও কৃষ্ণকাঠী ইউনিয়নসহ আশপাশের এলাকায় হাজার হাজার মানুষের বসবাস। নদী বেষ্টিত এই এলাকা থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দূরত্ব প্রায় ১৫ কিলোমিটার এবং জেলা সদরের শেরেবাংলা মেডিকেলের দুরত্ব অন্তত ২০ কিলোমিটার। এ এলাকার মানুষ বিশেষ করে, প্রসূতি নারী ও শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়লে, তাদের উপজেলা কিংবা জেলা শহরে দ্রুত নিয়ে যেতে যানবাহন এবং কখনো অর্থ সমস্যায় পড়তে হয় স্থানীয়দের। সময়মতো চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে না পারায় কখনো মা, কখনো নবজাতক আবার কখনো সংকটাপন্ন হয় মা-শিশু উভয়েই।
এমন অবস্থায় স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৩ সালে ৩০ জুলাই ওই অঞ্চলের কয়েক হাজার অবহেলিত মা ও শিশুদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় চরাদী ইউনিয়নের মকিমাবাদে ১০ শয্যা বিশিষ্ট একটি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনকে জমি অধিগ্রহনের নির্দেশ দেয়।
মকিমাবাদের শিকদার বাড়ির কাছে স্থানীয় এক ব্যক্তির দান করা ৫০ শতাংশ জমিতে স্থান নির্ধারণ করে ৩ তলা বিশিষ্ট ১০ শয্যার একটি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকার টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর। মাটি পরীক্ষা করে গত ১৬ মার্চ কার্যাদেশও দেয়া হয়েছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন স্থানীয় একটি পক্ষের বাঁধার কারণে মকিমাবাদ নারী ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছেনা বলে অভিযোগ সুবিধা বঞ্চিতদের।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মো. মিলন শিকদার জানান, শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে পূর্ব নির্ধারিত স্থান মকিমাবাদে নারী ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণে বাঁধা দিচ্ছেন উপজেলা চেয়ারম্যানের লোকজন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা চেয়ারম্যানের স্থানীয় প্রতিনিধি চরাদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ফারুক হোসেন বলেন, তারাও চাচ্ছেন মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র হোক। তবে সেটি শিকদার বাড়ির কাছে নয়, উপজেলা চেয়ারম্যানের দান করা জমিতে।
প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ স্থান নির্ধারণ সংক্রান্ত বিরোধ সমাধান করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সেখানে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
বরিশাল জেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যণি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. মো. তৈয়বুর রহমান জানিয়েছেন, মকিমাবাদ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণের সম্ভাব্য দু’টি স্থান পরিদর্শন করে তিনি মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠিয়েছেন। এখন এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে মন্ত্রণালয়।
স্থান নির্ধারনী জটিলতা নিরসন করে দ্রæত সময়ের মধ্যে মকিমাবাদ মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র নির্মানের কাজ শুরুর কথা জানিয়েছেন বাস্তবায়নকারী সংস্থা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী এ এফ মো. মুরশিদ।
এমজেড/পিআর