আশুলিয়ায় ব্যাংক ডাকাতি : ম্যানেজারসহ নিহত ৯
শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় দিনে দুপুরে বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে আশুলিয়া কাঠগড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এসময় ডাকাতদের গুলি ও বোমা হামলায় ব্যাংকের ব্যবস্থাপক, নিরাপত্তাকর্মী, গ্রাহক ও এলাকাবাসীসহ ৮ জন নিহত এবং জনতার গণপিটুনিতে এক ডাকাত সদস্য নিহত হয়েছেন। এদিকে গণপিটুনির সময় আহত অবস্থায় এক ডাকাতকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানায়, বিকেল ৩টার দিকে মোটরসাইকেল যোগে কাঠগড়া এলাকার বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকে হানা দেয় ৫ জনের একটি ডাকাত দল। দিনে দুপুরে ব্যাংকে ঢুকেই উপর্যুপুরি ছুরিকাঘাত শুরু করে ডাকাতরা। এসময় তারা ব্যাংকের ম্যানেজার ওয়ালিউল্লাহর কাছে লকারের চাবি চায়। তিনি চাবি না দেয়ায় বোমার বিস্ফোরণ ঘটায় ডাকাতরা। বোমার আঘাতে অনেকেই মাটিতে লুটিয়ে পড়লে ডাকাতরা লকারের চাবি নিয়ে ক্যাশের টাকা লুট করে। এসময় ব্যাংকের সিকিউরিটি গার্ড, ব্যবস্থাপকসহ ব্যাংকের অন্যান্য কর্মকর্তা ও গ্রাহকদের ছুরিকাঘাত করে ডাকাতরা।
এদিকে ডাকাতদের লুটপাট ও বোমার শব্দে এগিয়ে আসে এলাকাবাসী। ডাকাতের হাত থেকে রক্ষা পেতে তারা স্থানীয় একটি মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেয়। ঘোষণার পরপরই ডাকাতদের ঘিরে ফেলে জনতা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এলাকাবাসীকে লক্ষ্য করে গুলি ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকে ডাকাতরা। এসময় গুলি ও বোমার আঘাতে আহত হয় অন্তত ২০ জন। হতাহতদের উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এক পর্যায়ে এলাকাবাসী পিছু হটলে মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায় ডাকাতরা। ডাকাতরা কাঠগড়া বাজার থেকে বেরিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলসহ ছিটকে পড়ে দুই ডাকাত। এসময় তাদের ধাওয়া দিয়ে আটক করে গণধোলাই দেয় এলাকাবাসী। সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ওই দুই ডাকাতকে উদ্ধার করে। পরে পুলিশের হেফাজতে মারা যায় অজ্ঞাত এক ডাকাত।
এ ঘটনায় নিহতরা হলেন, ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ওলিউল্লাহ খাঁন (৪০), নিরাপত্তাকর্মী ইব্রাহিম হোসেন (৩৭), ব্যাংকের গ্রাহক ও স্থানীয় গ্লোরিয়াস প্রিন্টার্সের মালিক সাহাবুদ্দিন পলাশ (৪২), ব্যাংকের পাশের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপের মালিক জিল্লুর রহমান (৫৫), মুদি দোকানদার মনির হোসেন (৩০), ঝালমুড়ি বিক্রেতা নুরুজ্জামান, কাপড়ের দোকানদার জমির উদ্দিন (৩৫) এবং এলাকাবাসী নুর মোহাম্মদ (৩৫)। জনতার গণপিটুনীতে নিহত ডাকাত সদস্যের নাম পাওয়া যায়নি।
এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারের ইনচার্জ ডা. নাসির হোসেন জানান, এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। আহতদের অনেককেই লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
ঘটনার পর এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে যান ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান। এসময় তিনি সংবাদকর্মীদের বলেন, এক ডাকাতকে জীবিত আটক করা হয়েছে। তার কাছ থেকে পুরো ডাকাতদলের ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। শিগগিরই বাকী ডাকাতদের গ্রেফতার করা হবে বলে দাবি করেন তিনি।
এমএএস/আরআই