বোম ডিসপোজাল ইউনিটের অপেক্ষায় আতিয়া মহল
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহলের বিভিন্ন স্থানে বোমা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এসব বোমা নিষ্ক্রিয় করতে বোম ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেয়া হয়েছে।
ঢাকা থেকে বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভবনটি ঝুঁকিমুক্ত করার পর সিআইডির (পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ) ক্রাইমসিনের সদস্যরা ভবনের ভেতর প্রবেশ করে লাশ দুটি উদ্ধার এবং বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করবেন বলে জানিয়েছেন মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) জেদান আল মুসা।
তিনি বলেন, বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা এখনও পৌঁছায়নি। তারা আসার পর আতিয়া মহলে অভিযান চালানো হবে। প্রথমে লাশ দুটি উদ্ধার করা হবে। আর ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বোমাগুলো নিষ্ক্রিয় করা হবে।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত বোম ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা সিলেটে পৌঁছাননি।
জেদান আল মুসা আরো বলেন, পুলিশ ভবনটি ঘেরাও করে রেখেছে। জনসাধারণকে নির্দিষ্ট দূরত্বে সরিয়ে দেয়া হয়েছে।
সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার জঙ্গি আস্তানা আতিয়া মহলে অপারেশন ‘টোয়াইলাইট’ মঙ্গলবার বিকেলে শেষ হয়। দুটি লাশসহ ভবনের দায়িত্ব পুলিশকে বুঝিয়ে দিয়ে সেনানিবাসে ফিরে যান প্যারা কমান্ডোরা।
আতিয়া মহলের নিচতলায় জঙ্গিরা অবস্থান করছে- এমন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঢাকার কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট ও মহানগর পুলিশের একটি দল গত বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাত আড়াইটার দিকে জঙ্গিদের ফ্ল্যাটের দরজায় তালা লাগিয়ে দিয়ে পুরো ভবনটি ঘিরে রাখে।
শুক্রবার (২৪ মার্চ) সকাল ৮টার দিকে ওই বাড়ির ভেতর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছোড়া হয়। পরে ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াটকে পাঠানো হয় ঘটনাস্থলে।
তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সন্ধ্যা থেকে পুরো এলাকার নিয়ন্ত্রণে নেয় সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো দল। পরের দিন তারা ওই ভবনের ২৯টি পরিবারের ৭৮ বাসিন্দাকে উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে নেন।
২৫ মার্চ সন্ধ্যায় অভিযান নিয়ে সেনাবাহিনীর প্রেস ব্রিফিং শেষে দুই দফা বিস্ফোরণে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ছয়জন নিহত হন। আহত হন র্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধানসহ ৪৬ জন।
অভিযানের চতুর্থ দিন (সোমবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় প্রেস ব্রিফিংয়ে সেনাবাহিনী জানায়, অভিযানে চার জঙ্গি নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে তিনজন পুরুষ ও এক নারী। ভবনের ভেতরে আর কোনো জীবিত জঙ্গি নেই।
অভিযান সফলভাবে শেষ হওয়ার পর ভবনে থাকা দুটি লাশসহ আতিয়া মহলের দায়িত্ব পুলিশকে বুঝিয়ে দেয় সেনাবাহিনী।
ছামির মাহমুদ/এমএআর/জেআইএম