খরগোশ পালনে বদলে গেল গ্রামটি
নেত্রকোনা জেলার একটি গ্রামে খরগোশ পালন করে অনেক বেকার যুবক স্বাবলম্বী হয়েছেন। ওই গ্রামের বিভিন্ন এলাকায় বর্তমানে খরগোশের খামার গড়ে উঠেছে। এসব খামারে পালন করা হচ্ছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রকার খরগোশ।
জানা যায়, জেলার সীমান্তবর্তী ওই গ্রামে খরগোশ পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছে পুরো এলাকার মানুষ। দরিদ্র এসব মানুষের ভাগ্য বদলে দিয়েছে খরগোশ।
ছেলেমেয়েদের পড়াশুনাসহ সংসারের খরচ চালিয়ে এখন স্বনির্ভর সীমান্তের কালাপানি গ্রামের মানুষ। পাশাপাশি সরকারি সহযোগিতা পেলে বাণিজ্যিকভাবে খরগোশ পালন করে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা দেখছে এলাকাবাসী।
নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলার লেংগুরা ইউনিয়নের সীমান্তের গ্রাম কালাপানি। মেঘালয়ঘেঁষা এই গ্রামের প্রতি বাড়িতেই খরগোশ পালন করছেন স্থানীয়রা।
দুই বছর আগে ওয়ার্ল্ড ভিশনের সহযোগিতায় গ্রামের মোট ৩২টি বাড়িতে পরীক্ষামূলকভাবে শুরু হয় খরগোশ পালন। এরপর কাজটি লাভজনক হওয়ায় সীমান্তের কর্মহীন এ মানুষগুলোকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি।
প্রতি মাসে একেকটি খরগোশ ৭-৮টি বাচ্চা দেয়ায় স্থানীয়দের মাঝে লাভজনক কাজে পরিণত হয় খরগোশ পালন। পরিণত একেকটি খরগোশ বিক্রি হয় ৬০০-৭০০ টাকায়। খরগোশের ছোট বাচ্চা বিক্রি হয় জোড়া ৮০০ টাকায়।
সীমান্তের কালাপানি গ্রামের খরগোশ পালন করে স্বাবলম্বী নারী পারুল রিচিং জাগো নিউজকে বলেন, একসময় তিনবেলা খেতে পারত না এই গ্রামের মানুষ। এখন সবাই স্বাবলম্বী। ছেলেমেয়েদের পড়াশুনাসহ সংসারের সব খরচ চালাচ্ছেন তারা।
গ্রামের স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত স্টিফেন নকরেক জাগো নিউজকে জানান, কয়েক বছরের ব্যবধানে গ্রামজুড়ে শুরু হয়েছে খরগোশ পালন। আর খরগোশ পালন করে ভাগ্য বদলেছে এ গ্রামের অনেকের।
তবে দুর্গম সীমান্ত অঞ্চল হওয়ায় চিকিৎসাসহ সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ভালোভাবে খরগোশ লালন-পালন করতে পারছে না অনেকেই। বর্ষাকালে খরগোশের বাচ্চা মারা যায় বলেও জানান তিনি। তিনি নিয়মিত পশুচিকিৎসক পাঠিয়ে লাভজনক এ কাজকে সহযোগিতা করার দাবি জানান।
কলমাকান্দার লেংগুরা ইউপি চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, দুই বছর আগে ওয়ার্ল্ড ভিশন গ্রামের লোকদের সহযোগিতা করেছিল। বর্তমানে আর কেউ তাদের সহযোগিতা করছে না। ফলে খরগোশ পালনে নানা রকম সমস্যা দেখা দিয়েছে। অনভিজ্ঞ এসব লোকদের তদারকি করলে লাভজনক এই কাজ আশপাশে ছড়িয়ে গেলে এলাকার আরও উন্নয়ন হবে।
নেত্রকোনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা শংকর কুমার বসাক জাগো নিউজকে বলেন, শুরুতে কালাপানি গ্রামের লোকদের খরগোশ পালনের জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি সীমান্তের এই গ্রামে নিয়মিত পশুচিকিৎসক পাঠিয়ে খরগোশ পালনে সহযোগিতা করা হবে।
কামাল হোসাইন/এএম/পিআর