ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

১৮০ বাংলাদেশিকে বমি চেটে খেতে বাধ্য করা হতো

প্রকাশিত: ১১:০৯ এএম, ১১ এপ্রিল ২০১৫

১৮০ বাংলাদেশিকে ইরাকের নাজাফ শহরে একটি বদ্ধ ঘরে আটকে সকাল-বিকেল-রাতে পাইপ ও লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়, মদ খেয়ে বমি করে সেগুলো চেটে খেতে বাধ্য করা হয় এবং অনেকের উপর যৌন নির্যাতন চালানো হয়। কাউকেই ঠিকমতো খাবার দেয়া হতো না, দিনে ২০ ঘণ্টা কাজ করিয়ে নেয়া হতো এবং নিরাপত্তাব্যবস্থা না রেখে বহুতল ভবনের উপর উঠে কাজ করানো হতো। ক্যারিয়ার ওভারসিস কোম্পানির লোক ছাড়াও ভাড়া করা ইরাকি সন্ত্রাসীরা এ কাজ করতো।

এভাবেই ইরাকে পাচারের শিকার বাংলাদেশিদের ওপর বর্বর নির্যাতনের বর্ণনা দিলেন ইঞ্জিনিয়ার মো. সিদ্দিক। সম্প্রতি ইরাক থেকে পালিয়ে দেশে ফিরেছেন তিনি।

শনিবার দুপুরে প্রেসক্লাব যশোরে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে ইঞ্জিনিয়ার সিদ্দিক জানান, শ্রম পাচারের নামে বাংলাদেশের কতিপয় রিক্রুটিং এজেন্সি বিদেশে মানুষকে কেনাবেচার হাটে তুলে বিক্রি করছে। সেখানে বিক্রি বাংলাদেশিদের দাস হিসেবে কিনে স্থানীয়রা তাদের উপর চালাচ্ছে নারকীয় নির্যাতন। রিক্রুটিং এজেন্সি ক্যারিয়ার ওভারসিস কনসালটেন্ট লি. গত বছরের ২২ মে যে ১৮০ জন বাংলাদেশিকে ইরাকে নিয়ে গিয়েছিলো তাদের উপরও অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়েছে।

নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে সিদ্দিক জানান, ইরাকের বন্দীদশা থেকে পালিয়ে স্থানীয় বাংলাদেশিদের সহায়তায় গত ৪ এপ্রিল দেশে ফিরে আসেন ইঞ্জিনিয়ার মো. সিদ্দিক। তিনি বলেন, সরকারের চোখে ধুলো দিয়ে ক্যারিয়ার ওয়ারসিস কোম্পানি বিদেশে মানব পাচার করে আসছে।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, যেখানে কাজের কোনো সুযোগ নেই, যে দেশটি যুদ্ধ বিধ্বস্ত এবং যেখানে বিদেশিদের জীবনের নিরাপত্তা প্রশ্নের সম্মুখিন সেই দেশে মানুষ পাঠানোর নির্দেশনা কীভাবে ক্যারিয়ারকে দেয়া হলো?

তিনি বলেন, তাদের ১৮০ জনকে কাতারে নিয়ে যাওয়ার জন্য চুক্তি করেছিলো ক্যারিয়ার। কিন্তু, তাদের সাথে প্রতারণা করে এবং কোনো কিছু বুঝতে না দিয়েই ইরাকে নিয়ে যাওয়া হয়। ক্যারিয়ারের এই অবৈধ কাজের সহযোগিতায় রয়েছেন ইরাকস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রধানসহ কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারি।

তিনি আরও জানান, ইরাকে পাচারের শিকার ১৮০ জনের মধ্যে তিনিই পালিয়ে দেশে ফিরতে পেরেছেন। আরও ১১ জন পালালেও তারা দেশে আসেনি। আর বাকীরা এখনও ইরাকে মানবেতর জীবনযাপন করছে।

ইঞ্জিনিয়ার সিদ্দিক মানব পাচারের দায়ে ক্যারিয়ার ওভারসিস কনসালটেন্ট লি. এবং তাদের সহযোগীদের শাস্তি, পাচারের শিকার ব্যক্তিদের নিরাপদে দেশে ফিরিয়ে আনা এবং উপযুক্ত ক্ষতিপূরণের দাবি জানান। একইসাথে যারা বিদেশে যেতে ইচ্ছুক তাদেরকে সতর্ককতার সাথে এগুনোরও পরামর্শ দেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে সিদ্দিকের ভাই মো. জাভেদ এবং মানবাধিকার কর্মী সরোয়ার হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

এমএএস/আরআই