অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ, মাদরাসা বন্ধ
লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার ফরাশগঞ্জ ফয়েজ আম আলিম মাদরাসা পরিচালনা কমিটি গঠনের জের এবং প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষের বিভিন্ন অনিয়ম ও অপসারণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ-সমাবেশ করে স্থানীয় লোকজন। তোপের মুখে অধ্যক্ষের নির্দেশে বুধবার থেকে দুইদিনের জন্য মাদরাসা ছুটি ঘোষণা করা হয়।
বুধবার সকাল ১০টার দিকে চর লরেন্স বাজারে বিক্ষোভ মিছিল বের করে স্থানীয় এলাকাবাসী। এর আগে মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরেও একই ঘটনায় বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার লোকজন অংশ নেয়। এ সময় অধ্যক্ষের অপসারণ ও নতুন কমিটি বাতিলের দাবি জানানো হয়।
বিক্ষুব্ধ রাকিব হোসেন, মো. ইসমাইল ও ফারুক হোসেনসহ কয়েকজন এলাকাবাসী জানায়, অধ্যক্ষ আলী আকবর প্রতিষ্ঠানের জমি বিক্রি ও বিভিন্ন খাতের টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এ ঘটনায় মাদরাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সাবেক সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
এর জের ধরে সাবেক সভাপতির নাম বাদ রেখে মাদরাসা অধ্যক্ষ কৌশলে বহিরাগত ওলামা লীগ নেতা আবদুল্লাহ আল ইস্রাফিলের নাম দিয়ে বর্তমান এমপি আবদুল্লাহ আল মামুনের কাছ থেকে সুপারিশ নিয়ে তা শিক্ষা বোর্ডে প্রেরণ করেন। সুপারিশ করা ব্যক্তিকে বোর্ড অনুমতি দেয়। সভাপতির পদ থেকে সাবেক এমপির নাম বাদ পড়ায় ও অধ্যক্ষের অনিয়মের অভিযোগ এনে দুইদিন ধরে প্রতিবাদ বিক্ষোভ ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।
সরেজমিনে বুধবার দুপুর ১২টায় দেখা যায়, মাদরাসা সকল শ্রেণি কক্ষে তালা ঝুলছে। শিক্ষক শিক্ষার্থীরা কেউ উপস্থিত নেই। তবে এসময় বাহিরে জাতীয় পতাকা উড়তে দেখা যায়।
সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলাম বলেন, মাদরাসাটি আমার বাবার গড়া। ৪১ বছর ধরে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। অধ্যক্ষ প্রতিষ্ঠানের জমি বিক্রি করে এবং বিভিন্ন খাত থেকে টাকা আত্মসাত করে। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ ও জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি। এতে বর্তমান সংসদ সদস্যকে ভুল বুঝিয়ে বহিরাগত ওই ব্যক্তির নামে সুপারিশ দিয়ে বোর্ডে পাঠায় অধ্যক্ষ।
মাদরাসা অধ্যক্ষ আলী আকবর বলেন, বিক্ষোভের পর আমি দুইদিনের জন্য মাদরাসা বন্ধ ঘোষণা করেছি। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা সত্য নয়। সাবেক এমপি সিরাজুল ইসলাম ব্যবস্থাপনা কমিটি থেকে বাদ পড়ায় বিষয়ে আমার কোনো হাত নেই।
এ বিষয়ে লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি ও কমলনগর) আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য আবদুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, মাদরাসা অধ্যক্ষ তিন ব্যক্তির নাম নিয়ে এলে আমি ইস্রাফিলের জন্য সুপারিশ করি। ওই তালিকায় সাবেক সংসদ সদস্য সিরাজুল ইসলামের নাম ছিল না।
এ ব্যাপারে কমলনগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ চৌধুরী বলেন, মাদরাসার অধ্যক্ষ জানিয়েছেন সংরক্ষিত ছুটি দিয়েছেন। ছুটি হলে জাতীয় পতাকা উড়ছে কেন এমন প্রশ্নে কোনো উত্তর দেননি তিনি।
কাজল কায়েস/এএম/জেআইএম