ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ঠাকুরগাঁওয়ে আবাদি জমিতে ইটভাটা

প্রকাশিত: ০৭:৪৪ এএম, ০৮ এপ্রিল ২০১৫

ঠাকুরগাঁও জেলায় আবাদি জমিতে ইটভাটা স্থাপনের কুফল ভোগ করতে শুরু করেছেন কৃষকরা। ইটভাটার গরম বাতাসে ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে কয়েকশ’ হেক্টর জমির ধান। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন শতাধিক দরিদ্র কৃষক।

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার দেবীপুর ইউনিয়নের ৬০ বিঘা জমির বোরো ক্ষেত পুরোটাই চিটায় পরিণত হয়েছে। দেবীপুর এলাকায় ভাটার পাশের জমিতে বোরো ধান রোপণ করেন ৫০ জন প্রান্তিক কৃষক। তাদের কেউ স্ত্রীর গহনা বিক্রি করে, আবার কেউবা স্থানীয় মহাজনের কাছে সুদের উপর ঋণ করে অন্যের জমি বর্গা নেন। তিন মাস আগে ঋণের এসব টাকা নিয়ে জমিতে বোরো ধান লাগান তারা।

শর্ত থাকে ধান উঠলে সুদসহ তা পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু ভাটার কারণে ধানগাছে শীষ এলেও তাতে ধান নেই, সবই চিটা, ক্ষেতের পাশে গড়ে ওঠা ইটভাটার নির্গত গরম বাতাস ও ধোঁয়া আকস্মিকভাবে প্রায় সব ধানের ক্ষেত ঝলসে দিয়েছে এবং ফলন পাওয়ার ব্যাপারটি নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।

বজলুর রহমান, আব্দুর রশিদসহ ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, `গ্রামীণ ব্যাংক থেকে লোন নিয়া মুই পনে দুই বিঘা জমিত ধান লাগাইছিনু কিন্তু, ইটভাটার গরম বাতাসে হামার ধানগুলা নষ্ট হয়ে গেল। এ্যালা মুই লোন কেংকরি শোধ করিম, আর সারা বছর খাইম কি?`

আরেক ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক সাদেকুল জানান, `মুই মহাজনের কাছোত জমি বর্গা নিয়া ধান লাগাইছু। ওইলা ধান তো ভাটার গরম বাতাসত নষ্ট হয়া গেইছে।`

গেল বছরের এই ভাটার গরম বাতাসে কয়েক একর জমির ধান পুড়ে যায়। প্রতি বছর যদি এ ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হয় তাহলে আমরা চাষ করবো কীভাবে? আমরা চাই কৃষি জমির উপর থেকে অবিলম্বে ইটভাটা সরিয়ে নেয়া হোক। তা না হলে আমরা আন্দোলন করতে বাধ্য হবো। আন্দোলনের আগেই প্রশাসন ভাটা সরিয়ে নেয়ার ব্যপারে ব্যবস্থা নেবেন এমন প্রত্যাশা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের।

সদর উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম জানান, ভাটা মালিক কৃষকের ক্ষতিপূরণ হিসেবে বিঘা প্রতি ৩৫ মণ ধান দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করছি শিগগিরই কৃষকরা তাদের ক্ষতিপূরণ পাবেন। তবে কৃষি জমির উপর ইট ভাটা নির্মাণে কৃষি বিভাগের অনুমতি লাগলেও ওই ইটভাটা নির্মাণে কৃষি বিভাগ থেকে কোনো অনুমতি না নিয়েই তা নির্মাণ করা হয়েছে। আর অপরিকল্পিতভাবে ইটভাটা নির্মাণের ফলে গরম বাতাসে প্রতি বছর কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন।

আর এ বিষয়ে ইটভাটা মালিক হুমায়ুন কবির জানান, আমার ইটভাটার কারণে কোনো কৃষকের ধান ক্ষতিগ্রস্থ হয়নি। আর কোনো কৃষককে ক্ষতিপূরণ দেয়া হয়নি। কেনই বা কৃষককে ক্ষতিপূরণ দেবো এমন কথা বলে বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।    
 
এমজেড/বিএ/এমএস