ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

বিপদসীমার ওপরে যমুনার পানি

প্রকাশিত: ০৮:২৪ এএম, ১৯ আগস্ট ২০১৪

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অবিরাম বর্ষণের কারণে যমুনা নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় বগুড়ায় ৪ সেন্টিমিটার সিরাজগঞ্জে ২ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। মঙ্গলবার সকালে এই দুই জেলায় পানি বৃদ্ধি পেয়ে যথাক্রমে সিরাজগঞ্জে ২৭ সেন্টিমিটার ও বগুড়ায় চার সিন্টমিটার বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণে যমুনা নদীতে প্রতি মুহূর্তে পানি বাড়ছে। এতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ হুমকির মুখে পড়েছে।

সোমবার গভীর রাতে সারিয়াকান্দি উপজেলার রৌহদহ বাজারসংলগ্ন শেখপাড়া এলাকায় বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের অন্তত ২৫ মিটার ধসে গেছে। ধসে যাওয়া অংশ দিয়ে যাতে পানি লোকালয়ে ঢুকতে না পারে সে জন্য সেখানে বালুর বস্তা ফেলা হচ্ছে। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধের পেছনে চলছে বিকল্প রিং বাঁধ নির্মাণ কাজ।  

নদীর ভাটির দিকে পানির চাপ ক্রমেই বাড়তে থাকায় অনেক স্থানে বাঁধ চুইয়ে লোকালয়ে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। তাছাড়া নদীসংলগ্ন বাঁধের নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। বহু বসতবাড়িতে পানি ঢুকেপড়েছে। চরাঞ্চলে শত শত বিঘা জমির আমন ও পাটসহ নানা ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। নদীপাড়ের বাসিন্দারা শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। এরই মধ্যে প্রায় অর্ধশত পরিবার তাদের বসতবাড়ি উঁচু স্থানে সরিয়ে নিয়েছে।

শেখপাড়া এলাকার বাসিন্দা ৬০ বছর বয়সী আবদুল আউয়াল জানান, পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাঁধেও ধস নামতে শুরু করেছে। অনেক স্থানে পানি চুইয়ে গ্রামে ঢুকতে শুরু করেছে।

বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর আশ্রয় নেওয়া ওই এলাকার গৃহবধূ সাবিনা আকতার জানান, বাঁধ চুইয়ে আসা পানিতেই বাড়িঘরে থাকা যাচ্ছে না। বাঁধ ভেঙে গেলে তাদের ঘরবাড়ি সবই ভেসে যাবে।

পাউবোর বগুড়া বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবদুল মোতালেব জানান, বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধটিকে যে কোনো মূল্যে টিকিয়ে রাখতে তারা রাতদিন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি জানান, এর আগে ভাঙনের কারণে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধের কয়েকটি স্থানে ধস নেমেছিল। দু`দিনে প্রতি মিনিটে পানি বাড়তে থাকায় বাঁধের কয়েকটি স্থানে নতুন করে ধস নামতে শুরু করে।

সারিয়াকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান খান জানান, বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধটি যে কোনো মূল্যে টিকিয়ে রাখার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ৫০ টন চাল এবং ৮০ বান্ডিল ঢেউটিন মজুদ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে দ্রুত ত্রাণ তৎপরতা শুরু করা হবে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বাবুল চন্দ্র শীল জানান, পানি বৃদ্ধির ফলে যমুনা নদীর তীরবর্তী সিরাজগঞ্জ সদর, বেলকুচি, এনায়েতপুর, চৌহালী, কাজিপুর ও শাহজাদপুর উপজেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।

পানির প্রবল স্রোতে ও ঘূর্ণাবর্তের কারণে সোমবার এনায়েতপুরে নদীর ভাঙ্গন রোধে নির্মিত সলিড স্পার বাঁধের মাটির অংশের প্রায় ৩০ মিটার এলাকা যমুনা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে।

এদিকে, পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. বিল্লাল হোসেন জানিয়েছেন।