ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

হাসপাতাল থেকে বোনকে নিয়ে বাড়ি চলে গেলেন ভাই

প্রকাশিত: ০১:০৮ পিএম, ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত বোন রুমা আক্তারকে নিয়ে গত ১৫দিন ধরে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন মোটরসাইকেল মেকানিক ভাই রনি।

বাড়িতে থাকা সামান্য যে টাকা এনেছিলেন এই কয়েকদিনে রুমার বিভিন্ন পরীক্ষাি নিরীক্ষা করতে শেষ হয়ে গেছে। কোনো উপায় না পেয়ে পরবর্তী সব চিকিৎসা ফেলে অবশেষে গত সোমবার বোনকে নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন তিনি।

হাসপাতালের নিউরো সার্জন সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. শফিউল আলম এবং একই হাসপাতালের নিউরো সার্জন নাজমুন নাহার রুমার এমআরআইসহ বিভিন্ন পরীক্ষা নিরিক্ষা করে জানিয়েছেন, রুমা আক্তার ব্রেইন টিউমারে আক্রান্ত। দ্রুত অপারেশন করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন ৩ লাখ টাকা। যা বহন করা একেবারে অসম্ভব হয়ে পড়েছে সামান্য মোটরসাইকেল মেরামতকারী ভাই রনি ও বাবা পত্রিকার হকার মোবারক খানের কাছে। এখন নিজ বাড়িতে বিছানায় শুয়ে থেকে মৃত্যুর প্রহর গুনছে রুমা।

নীলফামারী জেলা শহরের সবুজপাড়া মহল্লার পত্রিকার হকার মোবারক খানের মেয়ে রুমা আক্তার। সে নীলফামারী সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের অনার্সের চতুর্থ বর্ষের ছাত্রী। মোবারক খানের চার ছেলের মধ্যে সবার ছোট রুমা। তাই বাড়ির সকলে তাকে আদরের নামে ডাকে ইতিমনি। কিন্তু ইতি নামের এই মেয়েটি এখন জীবনের ইতি টানার পথে।

রুমার ভাই রনি জানান, গত কয়েকমাস ধরেই মাথা ব্যথা রুমা আক্তারের। দুদিন ভালো থাকে তো, বাকি দিনগুলো কাটে মাথা ব্যথায়। ব্যথা প্রচণ্ড হলে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে সে। বিষয়টি নিয়ে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়ি আমরা।

তিন মাস আগে রংপুর মেডিকেলের আউটডোরে ডাক্তার দেখালে তারা সিটিস্ক্যান করার পরামর্শ দেন। সিটিস্ক্যান দেখে রংপুর মেডিকেলের ডাক্তার প্রথমে জানান, মাথায় পানি জমেছে। দুইদিন পর জানান মাথায় আঘাত লেগে রক্ত জমাট বেধেছে, অপারেশন করলে ঠিক হয়ে যাবে। তারও দুইদিন পর জানান, এটি সম্ভবত টিউমার। ঢাকায় ডাক্তার দেখাতে হবে। এভাবে আটদিন কেটে যায় রংপুর মেডিকেলে।

সেখানে ডাক্তারের একেক সময় একের কথা শুনে বিব্রত হয়ে পড়েন রুমার পরিবার। এরপর রংপুর মেডিকেলের অবসরপ্রাপ্ত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. বাকিবুল ইসলামের কাছে রুমাকে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি সিটিস্ক্যানটি দেখেই বলে দেন এটি ব্রেইন টিউমার। দ্রুত ঢাকায় নিয়ে যান।

Ruma

তিনি আরও জানান, এলাকায় ধারদেনা করে এ পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ করেছি রুমার জন্য। আর কুলাতে পারছি না। সামান্য মোটরসাইকেল মেরামত করে আর কত টাকাই বা পাওয়া যায়। ঢাকায় বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করতেই সব শেষ হয়ে গেছে। এখনও চিকিৎসায় শুরু করতে পারিনি। জানি না তাকে বাঁচাতে পারবো কীনা?

এ ব্যাপারে নীলফামারীর প্রবীণ সাংবাদিক তাহমিন হক ববি জাগো নিউজকে জানান, পরিবারটির অবস্থা খুবই খারাপ। কলেজে খোঁজ নিয়ে জেনেছি মেয়েটি অত্যন্ত মেধাবী। সবাই চেষ্টা করছি মেয়েটির জন্য কিছু করতে। কিন্তু কোনো সাড়া পাচ্ছি না।

রুমার বাবা মোবারক খান জাগো নিউজকে জানান, এতদিন অন্যের অসুস্থতার খবর পৌছে দিয়েছি পাঠকের বাড়ি বাড়ি। আজ নিজের মেয়েকে বাঁচানোর জন্য ছুটছি এক প্রান্ত থেকে অপরপ্রান্ত।

তিনি বলেন, শুনেছি আমাদের সমাজেন অনেক উদার মানুষ আছেন যারা অসহায় গরিবদের সেবা করেন নীরবে। আল্লাহ কী এমন একজন মানুষ পাঠাবেন আমার মেয়েকে বাঁচাতে? তিনি মেয়ে বাঁচাতে সমাজের হৃদয়বান মানুষদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।

রুমার চিকিৎসার কেউ সাহায্য পাঠাতে চাইলে যোগাযোগ করতে পারেন তার ভাই রনির সঙ্গে। ফোন নম্বর ০১৭৪৪-২৫২৫০৫। এছাড়াও কেউ সহযোগিতা করতে চাইলে জাগো নিউজের মাধ্যমে করতে পারেন।

যোগাযোগ:
মাহাবুর আলম সোহাগ
সহকারী বার্তা সম্পাদক
মোবাইল : ০১৭১১-৩৩৯৯৪৬

এমএএস/এমএস

আরও পড়ুন