ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

পাইকগাছার শীর্ষ জমিদার বংশটি আজ পথের ভিখারি

প্রকাশিত: ০২:২৩ পিএম, ২৪ অক্টোবর ২০১৬

খুলনার পাইকগাছায় জন্মান্ধ ও বোবা ৩ সন্তানকে নিয়ে এক কালের জমিদার বংশ আজ পথের ভিখারি। বিষন্নতা আর কান্না প্রতিনিয়ত তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে তাদের। দুঃখ, কষ্ট, লাঞ্ছনা, বঞ্চনা ঘিরে আছে পরিবারটিকে।

জেলার পাইকগাছা উপজেলার তোকিয়া গ্রামের আবুল কাশেম (আবুল) বিশ্বাসের তিন সন্তানই জন্মান্ধ। আবুলের পূর্বপুরুষরা ছিলেন জমিদার পরিবার। জমিদার পরিবারের উত্তরসূরি আবুল কাশেম (আবুল) বিশ্বাসের চার সন্তানের মধ্যে জাকির বিশ্বাস (৪০), ফারুক বিশ্বাস (৩৮) ও শেফালী খাতুন (২৬) জন্মান্ধ।
 
প্রথম কন্যাসন্তানটি সুস্থ ও স্বাভাবিক থাকলেও অন্ধ তিন সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন আবুল। সম্পদ-সম্পত্তি যা ছিল সবকিছুই তিন সন্তানের চিকিৎসায় শেষ করে আজ পরিবারটি নিস্ব। শিশুকালে অন্ধাবস্থায় ফারুক ও জাকির ১০ পারা পর্যন্ত কুরআন শরিফ মুখস্থ করে বলে তারা জানায়।

Khulna 

সাংসারিক অভাব-অনটনের জন্য ফারুক ও জাকির ভিক্ষার পথ বেছে নিয়েছে। তাই এখন তারা সকাল ৮টা থেকে দুপুর পর্যন্ত গদাইপুর বাসস্ট্যান্ডে বসে থাকে কখন বাস আসবে। বাস দাঁড়াতেই উঠে পড়ে তাতে যাত্রীদের কাছে ২/১টি টাকার জন্য হাত পাততে থাকে। তা থেকে প্রতিদিন আয় ৪০/৫০ টাকা এবং ৬ মাস পরে দু’ভাইয়ের ৬ হাজার প্রতিবন্ধী ভাতা দিয়ে চলে তাদের সংসার।

তবে বিস্ময়কর হলো, চলাচল করতে পথ চিনিয়ে দিতে কারো সাহায্যের প্রয়োজন হয় না তাদের। অনুভূতি ও ঘ্রাণ দিয়ে পথ চলে তারা। ৮ বছর আগে পার্শ্ববর্তী থানা আশাশুনির মুড়োগাছা গ্রামের সুমি নামে এক মেয়েকে বিয়ে করেন ফারুক। সংসার জীবনে ফারুক ২ সন্তানের জনক। বর্তমানে তিনি স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

শেফালী খাতুন আবুল বিশ্বাসের ছোট মেয়ে। সেও জন্মান্ধ ও বোবা। লোকজন গেলে কোনো কিছুই বুঝতে না পারলেও ঘাড়-মুখ এদিক-ওদিক ফিরিয়ে ফ্যাল-ফ্যাল করে হাসে। সারাদিন ছোট্ট একটি ঘরে বসে কান্না-কাটি করে। তথ্য সংগ্রহে এ পরিবারে যাওয়ার পর অসহায় এ পরিবারের সকলেই কান্নায় ভেঙে পড়ে এবং বলতে থাকে এমনকি পাপ করেছি আল্লাহ আমাদের উপর এমনিভাবে প্রতিশোধ নিচ্ছে।

আবুল বিশ্বাসের দাদা খাতের আলী বিশ্বাস ছিলেন পাইকগাছার শীর্ষ জমিদার। অথচ আজ সে পরিবারটি সবকিছু হারিয়ে পথের ভিখারি। অসহায় এ পরিবারটির আয়ের কোনো উৎস না থাকায় সন্তানদের ভবিষ্যৎ ভাবনায় প্রধানমন্ত্রীর সাহায্য কামনা করেছেন তাদের পরিবার।

আলমগীর হান্নান/এমএএস/এবিএস