দাদনের টাকায় পরীক্ষায় অংশ নিয়ে মেডিকেলে চান্স পেল রাসেল
অভাব-অনটনের মাঝেও পড়াশোনা চালিয়ে একের পর এক সফলতা অর্জন করেছেন মেধাবী ছাত্র রায়হানুল বারী রাসেল। এবার তিনি মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। তার এই সফলতায় রীতিমতো অবাক হয়ে গেছে এলাকার মানুষ।
রাসেল রংপুর মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সারাদেশের মেধা তালিকায় ৫১৪তম স্থান দখল করেছেন। সে অনুযায়ী রাসেলের ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ জুটবে।
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার পূর্ব সারডুবি গ্রামের দিনমজুর সাফিউল ইসলামের ছেলে রাসেল। এর আগে এসএসসিতে গোন্ডেন জিপিএ-৫ ও এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছেন তিনি।
এদিকে ছেলে মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেলেও হাসি নেই বাবার মুখে। কারণ মেডিকেলে ভর্তির ফি জোগাড় করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে বাবার পক্ষে। এই চিন্তায় তিনি ছেলের খুশি উপভোগ করছে পারছেন না। একই চিন্তায় পড়েছেন রাসেল ও তার মা।
উপজেলার পূর্ব সারডুবি গ্রামের সাফিউল ইসলাম দিনমজুরি করে সংসারের ঘানি টানছেন। তার স্ত্রী রাফিয়া বেগম গৃহিণী। ১২ শতক জমিতে টিন শেট ঘর করে বাস করেন তারা। চার ছেলে-মেয়েসহ ছয় সদস্যের সংসার তাদের।
এলাকার অনেকেই জানিয়েছেন, দিনমজুরির টাকায় পড়াশোনার খরচের পাশাপাশি ঠিকমতো খাবার জুটতোনা তাদের। প্রায় সময় না খেয়ে পড়াশোনা করতে হয়েছে রাসেলসহ তার ভাই-বোনদের। তবে বর্তমানে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে হতদরিদ্র হিসেবে ১০ টাকার চাল পেয়ে কোনো রকম খাবার জুটছে তাদের।
রাসেলের বাবা সাফিউল ইসলাম বলেন, দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ছেলেকে মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছিলাম। তাই দাদন ব্যবসায়ীর ওই টাকা এখন পর্যন্ত পরিশোধ করতে পারিনি। জানি না এখন কি হবে।
হাতীবান্ধা উপজেলার মিলনবাজারের মোজাম্মেল হোসেন আহম্মেদ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোয়াজেম হোসেন জানান, রাসেল ছোট থেকেই মেধাবী। এই মেধাবী ছাত্রকে কেউ সাহায্য করলে তার ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হবে।
এমএএস/আরআইপি