ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

নামেই মৎস্য প্রকল্প বাস্তবে নেই

প্রকাশিত: ০৯:২৬ এএম, ০৯ অক্টোবর ২০১৬

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলা মৎস্য অধিদফতরের বিভিন্ন প্রকল্প নামেই রয়েছে। বাস্তবে তার অস্তিত্ব নেই।

খাঁচায় মাছ চাষ, বিভিন্ন জলাশয়ে পোনা অবমুক্তকরণ, প্রশিক্ষণ, জেলেদের পরিচয়পত্রসহ বিভন্ন প্রকল্পে নাম মাত্র খরচ করে বাকি টাকা পকেটে ভরছেন স্বয়ং মৎস্য কর্মকর্তাসহ তার সুভাকাঙ্ক্ষিরা।

‘ইন্টিগেটেড এগ্রিকালচারাল প্রোডাক্টটিভিটি প্রজেক্ট (আইএপিপি) প্রকল্পে উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মুড়িয়ারহাট তেলিয়ারনীর পাড়ে একটি প্রকল্প দেয়া হয়। রাতারাতি সংগঠনের নাম বদলে ‘মুড়িয়ারহাট তেলিয়ানীর পাড় মৎস্যজীবী সমিতি’ হয়ে যায়।

প্রকল্পে দুধকুমার নদীতে ড্রাম ও নেটের মাধ্যমে তৈরি খাঁচায় তেলাপিয়া মাছ চাষের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় ৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। সমিতি ও মৎস্য বিভাগের সমন্বয়ে প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থ কাজে লাগানোর কথা রয়েছে। কিন্তু সমিতি একটি নৌকা তৈরি ও সংগঠনের ঘর উঠানো বাবদ পেয়েছেন মাত্র ১৩ হাজার টাকা।

এদিকে, দুধকুমার নদীতে ২০টি ড্রাম, পাইপ ও নেট দিয়ে একটি খাঁচা তৈরি করা হয়েছে। যাতে খরচ হয়েছে সর্বোচ্চ ৬০ হাজার টাকা। সংস্কারের বিষয়ে ‘মুড়িয়ারহাট তেলিয়ানীর পাড় মৎস্যজীবী সমিতি’র সদস্য মফিজুল ইসলাম, নবাব আলীসহ কয়েকজন জানান, খুব আশা নিয়া সমিতি করছি। প্রজেক্ট পাওয়ার পর সভাপতি নাম চেঞ্জ করল। কি করছে কেউ জানে না?

সমিতির সভাপতি আবেদ আলী বলেন, সদস্যদের কি জানাই। আমিই কিছু জানি না। এ পর্যন্ত ঘর তুলতে টাকা পেয়েছি ৫ হাজার। আর নৌকা তৈরি করতে মৎস্য অফিসার টাকা দিছে ৮ হাজার। আড়াই হাজার পোনা ছেড়েছে। মাঝে-মাঝে আসে কথা বলে যায় এই।

এছাড়াও বেশ কিছু প্রকল্পে মৎস্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। রাজস্ব খাতের বরাদ্দে উপজেলার নয়টি বিলে পোনা অবমুক্তকরণ প্রকল্পে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা বরাদ্দের মধ্যে কোনো কোনো বিলে ৪-৫ কেজি করে রেনু পোনা ছাড়া হয়েছে।

রংপুর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় এক লাখ টাকা বরাদ্দের অব্যবহৃত পোনা প্রকল্প; সন্তোষপুরে কার্প, রামখানায় তেলাপিয়া এবং কালিগঞ্জে কৈ মাছের পোনা অবমুক্তকরণ এ তিনটি প্রদর্শনীর হদিস পাওয়া যায়নি।

আইএফএস প্রকল্পে উপজেলায় আটটি ‘লাইভলিহুড ফিসারিজ ফারমারস স্কুল থাকলেও সেগুলোর কার্যক্রম নেই। এসব স্কুল প্রতি দুটি করে মোট ১৬টি প্রদর্শনী যার বরাদ্দ প্রতিটার ৩০হাজার টাকা। তবে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে এসব প্রদর্শনীর নামমাত্র সাইনবোর্ড ঝোলানো হয়েছে।

কথা হলে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সারোয়ার জাহান বলেন, নানান দিক সামাল দিয়ে প্রকল্প করতে হয়। রেনু পোনা টেন্ডারে দেয়া হয়েছে। প্রকল্পের নিয়ম অনুযায়ী সব করা হচ্ছে। এর বাইরে কোনো কথা নেই। দুধকুমার নদীতে বন্যার পর প্রকল্প শুরু করলেও বন্যায় দুইবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে দেড় লাখ টাকা সংস্কারের কথা জানান তিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু হায়াত মো. রহমতুল্লাহ বলেন, মৎস্য অধিদফতরের বিরুদ্ধে ছোটখাটো অভিযোগ কানে এসেছে। তবে কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। যদি লিখিতভাবে নির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া যায় তবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নাজমুল হোসেন/এসএস/আরআইপি