গরু আছে ক্রেতা নেই
শরীয়তপুরে গরুর হাটগুলোতে নেই কোনো ভারতীয় গরু। নেই মিয়ানমার থেকে আসা গরু। তবে হাটে প্রচুর গরু থাকলেও অভাব দেখা যাচ্ছে ক্রেতার এবং বিক্রিও কম বলে জানা গেছে।
গত বছর নিয়মিত হাট ছাড়াও নড়িয়ায় ৫টি, ভেদরগঞ্জে ৪টি, ডামুড্যায় ৪টি, জাজিরায় ৫টি, গোসাইরহাটে ২টি ও সদর উপজেলায় ৫টি অতিরিক্ত কোরবানির হাট বসেছিল । এ বছর অতিরিক্ত হাট বসার কথা এখনো শোনা যায়নি।
সদর উপজেলার মনোহর বাজার, জাজিরা কাজির হাট, নড়িয়া ভোজেশ্বর ও ঘড়িষাড়, গোসাইরহাট ইদিলপুর, ভেদরগঞ্জ সখিপুর গরুর হাট জেলার সবচেয়ে বড় হাট হিসেবে গণ্য।
এ বছর ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর হাটে গরুর সর্বোচ্চ মূল্য ধরা হয়েছে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। খাসি ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা সর্বোচ্চ দাম হয়েছে।
জেলার বিভিন্ন হাঁট ঘুরে দেখা গেল, স্থানীয় কৃষক ও ফরিয়ারা গরু বিক্রি করতে না পেরে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে, সাধ্যের চেয়ে গরুর দাম বেশি হওয়ায় অনেক ক্রেতা ফিরে যাচ্ছেন।
ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর গরুর হাটের ইজারাদার মো. মোয়াজ্জেম হোসেন সরদার বলেন, গত বছরের চেয়ে এব ছর দেশীয় গরু বেশি আসছে হাটে। ভারতীয় গরু না থাকায় গরুর দাম একটু বেশি মনে হলেও তুলনামূলকভাবে গরুর দাম কম। কিন্তু সাধারণ মানুষের বাজেটের তুলনায় ভালো গরুর দাম একটু বেশি। হাটে এখনো ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীদের তেমন আগমন ঘটেনি। তারা এলেই বেঁচা-বিক্রি বেড়ে যাবে।
গোসাইরহাট উপজেলার ইদিলপুর গরুর হাটের ইজারাদার মো. মিন্টু বেপারী বলেন, গরু আমদানি ভালো তবে ক্রেতার সংখ্যা কম।
সদর উপজেলার মনোহর বাজার গরুর হাটের ইজারাদার বিল্লাল সরদার বলেন, প্রতি সোমবার আমাদের গরুর হাট বসে। গরু অনেক আসছে কিন্তু দাম মোটামুটি। তবে ক্রেতা একেবারেই নেই।
জাজিরা উপজেলার কাজির হাট গরুর হাটের ইজারাদার আব্দুল ওয়াহাব মাদবর বলেন, হাট তেমন জমে উঠেনি। আগামী হাট থেকে জমে উঠবে বলে আশা করছি। গরুর আমদানি অনেক, বিক্রেতারা দাম ছাড়ছে না তাই বিক্রি কম।
ইদিলপুর হাটে গরু বিক্রি করতে আসা আলম বেপারী, ইকবাল আখন্দ বলেন, এবার গরুর দাম তুলনামূলক কম তবে আমদানি বেশি। ক্রেতা এখনো কম।
ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর গরুর হাঁটে গরু কিনতে আশা ছালাম মোল্লা বলেন, গরুর দাম মোটামুটি তবে কালো গরুর দাম বেশি। দেখতোও ভালো লাগে। তাই এ বছর কোরবানির জন্য ৮০ হাজার টাকা দিয়ে একটি কালো গরু কিনেছি।
দক্ষিণ তারাবুনিয়া গ্রামের গরু খামারি শাহজালাল মাল বলেন, প্রতি বছর ১৫ থেকে ২০টি গরু কোরবানির সময় বিক্রি করি। এ বছর ১৭টি গরু তৈরি করেছি। কিন্তু এখনো কোনো গরু বিক্রি হয়নি। জানিনা গরুগুলো বিক্রি করতে পারি কিনা।
জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ বছর হাটগুলোতে গরু আনা-নেয়ায় যাতে চাঁদাবাজি না হয় তার জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। প্রতিটি হাটে পুলিশ প্রহরা দেয়া হয়েছে। জাল টাকা সনাক্তের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বিক্রেতা ও ক্রেতা টাকা বহনে নিরাপত্তা চাইলে বিশেষ সহযোগিতা করা হবে।
এসএস/এমএস