ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

উত্তরে কমেছে ধানের দাম

প্রকাশিত: ০৪:০৫ এএম, ২৫ জানুয়ারি ২০১৫

অবরোধের কবলে পড়েছে উত্তরের ৮ জেলার ধানের বাজার। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি মণ ধানের দাম কমেছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা। ক্রেতার অভাবে দাম পড়ে গেছে বলে জানান ধান ক্রেতা-বিক্রেতারা। ফলে কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষক। তবে সবচেয়ে দাম পড়েছে ঠাকুরগাঁও জেলায়।

জানা গেছে, অবরোধ শুরুর পর থেকে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন হাট-বাজারে ধানের দাম পড়তে থাকে। বর্তমানে প্রতি মণ আমন ধান বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৬৫০ টাকায়। অথচ এসব ধান দুই আড়াই সপ্তাহ আগে বিক্রি হয়েছিল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায়। দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার পাকেরহাটে গত শনিবার প্রতি মণ ধান বিক্রি হয়েছে ৬০০ থেকে ৬৪০ টাকায়। ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার লাহিড়ি হাটে গত শুক্রবার ধানের মণ প্রতি দর গেছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা। বৃহস্পতিবার রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার শঠিবাড়ি ও নীলফামারী সদর উপজেলার ঢেলাপীর হাটে ধান কেনাবেচা হয়েছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা মণ দরে।

ধান ব্যবসায়ী ও কৃষকরা জানান, অবরোধের কারণে পাইকারি ব্যবসায়ীরা ধানের মোকামগুলোতে ধান কেনার জন্য আসছেন না। ফলে স্থানীয় বাজারেও চাহিদা না থাকায় দাম পড়ে গেছে। আর এরই সুযোগে এক শ্রেণীর মজুদদার ব্যবসায়ী কৃষকদের কাছ থেকে কম দামে ধান ক্রয় করে মজুদ করছেন।

দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার রানীরবন্দর এলাকার কৃষক জয়নাল আবেদীন ও আবুল কাশেম জানান, অবরোধের কারণে ধানের দাম কমে গেছে। ধান ক্রয় করতে বড় কোনো পাইকার বাজারে আসছেন না। তারা বলেন, প্রধান ফসল এই আমন ধান বিক্রি করে বোরো ধান ও আলুসহ রবি ফসল উৎপাদনে খরচ মেটানো হয়। শীতের কাপড় কেনাসহ সংসারের অন্যান্য চাহিদাও এই ধান বিক্রি করেই করা হয়। তাদের অভিযোগ, অবরোধ ও কৃষকের এ সময়ের চাহিদার সুযোগ নিচ্ছে মজুদদার ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা। কৌশলে কৃষককে কম দামে ধান বিক্রিতে বাধ্য করা হচ্ছে।

ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার পাড়িয়া গ্রামের কৃষক মোখছেদ আলী জানান, তিনি শুক্রবার লাহিড়ি হাটে ৮ মণ ধান নিয়ে গিয়েছিলেন। ক্রেতা কম থাকায় তিনি ৫৫০ টাকা মণ দরে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হন। দুই সপ্তাহ আগে একই হাটে ১২ মণ ধান তিনি ৭০০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছিলেন বলে জানান।

লালমনিরহাটের আদিতমারী এলাকার ধান ব্যবসায়ী আবদুল মজিদ জানান, তার কাছে যে ধান রয়েছে তা ক্রেতার অভাবে বিক্রি করতে পারছেন না। মোকাম বন্ধ থাকায় আগের কেনা ধানই তিনি বিক্রি করতে পারেননি। স্থানীয় পর্যায়ে মিল-চাতাল মালিকরা কিছু কিছু করে ধান তাদের কাছ থেকে কিনছেন ঠিকই, তবে দাম কমিয়ে দিয়েছেন।

রংপুর বিভাগের সবচেয়ে বড় আড়ত দিনাজপুরের পুলহাটের ব্যবসায়ী জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সভাপতি আলহাজ হামিদুর রহমান জানান, একে তো চাল ব্যবসায়ীরা ব্যাংক ঋণে জর্জরিত, তার ওপর অবরোধ-হরতালের মতো কর্মসূচির ফলে ধান কেনা সম্ভব হচ্ছে না।
কারণ হিসেবে বলেন, এসব ধান বা উৎপাদিত চাল বাইরে পাঠানো কঠিন হয়ে পড়েছে।

রংপুর জেলার ধান-চালের বড় মোকাম মাহিগঞ্জ চালকল মালিক সমিতির সদস্য মাসুম মিয়া দাম কমের কারণ হিসেবে জানান, এ মোকাম থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ২০ ট্রাক ধান-চাল দেশের বিভিন্ন স্থানে যেত। অবরোধের কারণে তা যেতে পারছে না। একই কথা বলেন ঠাকুরগাঁও চালকল মালিক সমিতির সম্পাদক মাহমুদ হাসান রাজু। তিনি বলেন, এ অবস্থায় ধান কিনে কি করব।

এএইচ