ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

রাজশাহীর পদ্মাপাড়ে গ্যাসের সন্ধান

প্রকাশিত: ১১:৩৫ এএম, ১৪ জানুয়ারি ২০১৫

রাজশাহী নগরীর উপকণ্ঠ পবা উপজেলায় পদ্মানদীর পাড়ের নিচে বুদবুদ আকারে গ্যাস বেরুচ্ছে। প্রায় মাস তিনেক আগে থেকে এ ঘটনা ঘটলেও স্থানীয় লোকজনের তা নজরে এসেছে ১৫ দিন আগে।

এদিকে এ ঘটনাকে রাজশাহীর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির বড় সম্ভাবনা হিসেবে দেখছেন ব্যবসায়ী সম্প্রদায়। তারা অবিলম্বে সম্ভাব্যতা যাঁচাই করে গ্যাস অনুসন্ধানের দাবি জানিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, পদ্মাপাড়ের যে স্থানটি দিয়ে বুদবুদ আকারে গ্যাস বেরুচ্ছে সেটি পবা উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের পাঁচ নম্বর বাধের নবগঙ্গা এলাকায়। বাধের নিচে প্রায় পাঁচশ গজ এলাকার ২৫টি স্থান দিয়ে গ্যাস বের হচ্ছে। গ্যাস বের হওয়ার প্রত্যেকটি স্থানে কিছুটা গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। গর্তগুলো অনেক নিচে নেমে গেছে। গর্তের মাটি সরালে গ্যাসের তীব্রতা আরো বাড়ছে। যেসবস্থান দিয়ে গ্যাস বের হচ্ছে সেখানে ভিড় করছেন কৌতুহলী মানুষ। দিনভর সেখানে থাকছে মানুষের সমাগম। বিশেষ করে শিশুরা সেখানে যাচ্ছে সবচেয়ে বেশি। গ্যাস বের হওয়ার স্থানগুলোতে গাছের পাতা ও খড় দিয়ে আগুন ধরাচ্ছে। এরপর তা দীর্ঘক্ষণ জ্বলছে।

পশ্চিম নবগঙ্গা এলাকার বাসিন্দা বেলাল উদ্দিন জানান, প্রায় তিন মাস আগে থেকে এখানে গ্যাস বের হচ্ছে। তখন বাধের নিচে পানি ছিলো। গ্যাস বের হওয়ার কারণে পানির ওপর দিয়ে বুদবুদের সৃষ্টি হচ্ছিল। এরপর পানি নেমে গেলে চর পড়েছে। এর ফলে যেসব স্থান দিয়ে এখন গ্যাস বের হচ্ছে সেখানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি আরো জানান, এর আগে ২০০০ সালে এরকম হয়েছিল। কিন্তু কোনো অনুসন্ধান হয়নি। এখানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অনুসন্ধান চালালে গ্যাস পাওয়া যেতে পারে বলে তিনি ধারণা করছেন।

একই এলাকার কলেজ শিক্ষার্থী ফারুক হোসেন। তিনি রাজশাহী নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

তিনি বলেন, প্রায় ১৫ দিন আগে এ স্থানের ২৫টি স্থান দিয়ে গ্যাস বের হচ্ছে। প্রতিদিন দিনভর কৌতুহলী মানুষ এখানে ভিড় করছেন। বিষয়টির সম্ভাব্যতা যাচাই করা দরকার। যদি সত্যিই গ্যাস হয়, তাহলে এ এলাকার উন্নয়নে তা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে তিনি মনে করেন।

এ ব্যাপারে হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে ঘটনাস্থলে যাইনি। এর আগেও ওই স্থান দিয়ে গ্যাস বের হয়েছে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবগত করবো। এরপর যদি তারা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়, তাহলে হয়তো গ্যাসের সন্ধান মিলতেও পারে। আর গ্যাস মিললে তা হবে আমাদের জন্য সৌভাগ্যের। কারণ, এর মাধ্যমে এ এলাকার দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নয়ন তরান্বিত করা সম্ভব হবে।

আশাবাদ ব্যক্ত করে রাজশাহী চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মনিরুজ্জামান মনি বলেন, গ্যাস পাওয়া গেলে তা হবে আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের সংবাদ। কারণ, এর ফলে রাজশাহীতে শিল্পায়ন হবে। সৃষ্টি হবে ব্যাপক কর্মসংস্থানের। ঘটবে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি। আমরা ব্যবসায়ী সম্প্রদায় অবিলম্বে ওই স্থানে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য এবং ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক চৌধুরী সারওয়ার জাহান বলেন, ভূপ্রকৃতিগত কারণে এ অঞ্চলে গ্যাস না থাকারই কথা। মাটির এতো অল্প গভীরতায় গ্যাস থাকে না। এটা মূলত মিথেন গ্যাস। আর এ কারণেই ম্যাচের কাঠিতে আগুন জ্বলছে। কচুরিপানা বা বিভিন্ন ধরনের নোংরা বস্তু পচে এ ধরনের গ্যাসের সৃষ্টি হয়। তবে এ ব্যাপারে সাবধান থাকা উচিত। কারণ এখানে আগুন ধরালে বড় ধরনের দুর্ঘটনার সৃষ্টি করতে পারে।