যমুনার পানি বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার উপরে
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সিরাজগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি ১৬ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বুধবার সকালে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপদসীমার ৫৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি বৃদ্ধির ফলে জেলার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এদিকে, বাড়ি ঘরে পানি উঠার কারণে অনেক বানভাসি মানুষ তাদের বাড়ি ঘর ছেড়ে উঁচু বাঁধে আশ্রয় নিচ্ছে।
অব্যাহতভাবে পানি বৃদ্ধির কারণে সিরাজগঞ্জের ৫ উপজেলার চরাঞ্চলের ২৯টি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানি বৃদ্ধির ফলে প্রতিদিনই জেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলসহ নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। এতে এ সকল এলাকার ফসলি জমিও তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছে কৃষকেরা।
এদিকে, বন্যা কবলিত এলাকার নলকূপগুলো ডুবে যাওয়ার কারণে খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। বিশুদ্ধ পানির অভাবে বন্যা কবলিত এলাকায় পানিবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।
রানীগ্রাম এলাকার কৃষক আমজাদ হোসেন জানান, তার জমিতে লাগানো শাক সবজি, ধুমচা, পাট, আমন ধান তলিয়ে গেছে। বন্যা হয়তো চলে যাবে, এই ক্ষতি তো আর লাঘব হবে না। জমির ফসল নষ্ট হওয়ার কারণে ভবিষ্যতে পরিবার পরিজন নিয়েই চলাই কষ্ট হবে বলে তিনি জানান।
একই গ্রামের দিনমজুর কফিল উদ্দিন জানান, তিনি দিনমজুরের কাজ করেন। এখন এলাকায় পানি উঠার কারণে কাজকর্ম সম্পূর্ণ বন্ধ। ঘরে যা জমানো টাকা ছিল তাও শেষ। এখন পরিবার পরিজনের মুখে কিভাবে খাবার তুলে দেবেন এই ভেবেই দুশ্চিন্তায় আছেন।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা ওয়ালি উদ্দিন জানান, সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, বেলকুচি, শাহজাদপুর ও চৌহালী উপজেলায় ২৯টি ইউনিয়নের প্রয় শতাধিক গ্রামের কমপক্ষে সাড়ে ৫ হাজার পরিবারের ৩০ হাজার লোকজন বন্যা কবলিত হয়েছে। এছাড়া ৭৫৪টি বাড়িঘর আংশিক ও পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি আরো জানান, বন্যার্তদের জন্য ১৩৯টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করার জন্য ইতোমধ্যে তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এ পর্যন্ত বন্যা কবলিত ৫টি উপজেলায় ১৪০ মেট্রিক টন চাল এবং ৩ লাখ নগদ টাকা সাহায্য দেওয়া হয়েছে। আরো ত্রাণ সামগ্রীর জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
বাদল ভৌমিক/এসএস/পিআর