ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

এবার রাগীব আলীর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল সরাতে গণবিজ্ঞপ্তি

প্রকাশিত: ০৩:০৭ এএম, ২৫ জুলাই ২০১৬

সিলেটের শিল্পপতি রাগীব আলীর অবৈধ দখল থেকে তারাপুর চা-বাগান মুক্ত করার পর এবার তার মেডিকল কলেজ ও হাসপাতালসহ যাবতীয় স্থাপনা ৩০ জুলাইয়ের মধ্যে সরাতে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে সিলেটের জেলা প্রশাসন।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. জয়নাল আবেদীন উচ্চ আদালতের রায়ের নির্দেশনা মোতাবেক গণবিজ্ঞপ্তি জারির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
     
জেলা প্রশাসন থেকে ২০ জুলাই পাঠানো গণবিজ্ঞপ্তিটি রোববার হাসপাতাল ও কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছায়। গতকাল গণবিজ্ঞপ্তি হস্তগত হওয়ায় তারা জানিয়েছেন, আজ সোমবার জেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে তাদের অবস্থান সম্পর্কে অবহিত করবেন। তবে কী অবহিত করা হবে এ বিষয়টি আগাম বলতে রাজি হয়নি কলেজ ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
    
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, ১৯১৫ সালের ২ জুলাই তারাপুর চা বাগানের তৎকালীন মালিক বৈকুণ্ঠচন্দ্র গুপ্ত শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ জিউ দেবতার নামে বাগানটি উৎসর্গ করেন। তখন থেকেই ৪২২ দশমিক ৯৬ একর জায়গা নিয়ে গড়ে ওঠা তারাপুর বাগান পুরোটাই দেবোত্তর সম্পত্তি। বৈকুণ্ঠচন্দ্র গুপ্তের পর তার ছেলে রাজেন্দ্র গুপ্ত এ দোবোত্তর সম্পত্তির সেবায়েত হন।

১৯৬৮ সালে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার বাগানটি ‘শত্রু সম্পত্তি’ হিসেবে ঘোষণা করে। মুক্তিযুদ্ধে রাজেন্দ্র গুপ্ত ও তার তিন ছেলে শহীদ হন। পরবর্তীকালে পঙ্কজ কুমার গুপ্ত মেডিকেল শিক্ষা গ্রহণে যুক্তরাজ্য চলে গেলে ১৯৯০ সালে ভুয়া সেবায়েত সাজিয়ে বাগানটির দখল করেন রাগীব আলী।

গত ১৯ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের আপিল বিভাগ এক রায়ে ছয় মাসের মধ্যে তারাপুর চা বাগান দখল করে গড়ে ওঠা সব স্থাপনা ছয় মাসের মধ্যে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বাগানটি প্রকৃত সেবায়েতকে বুঝিয়ে দেওয়া, বাগান দখল নিয়ে জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলা সক্রিয় করাসহ ১৭টি নির্দেশনা দেওয়া হয়।

উচ্চ আদালতের রায়ের পর গত ১৫ মে তারাপুর চা-বাগানের বিভিন্ন স্থাপনা ছাড়া ৩২৩ একর ভূমি সেবায়েত পঙ্কজ কুমার গুপ্তকে বুঝিয়ে দেয় জেলা প্রশাসন।

সিলেট নগরের পাঠানটুলা এলাকার উপকণ্ঠে তারাপুর চা বাাগান। প্রবেশ মুখে রাগীব আলী ও তার স্ত্রীর নামে জালালাবাদ রাগীব-রাবেয়া মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থাপন করা হয় ১৯৯৯ সালে। পরে নার্সিং ইনস্টিটিউটও প্রতিষ্ঠা করা হয়। মেডিকেল কলেজ, হাসপাতাল, নার্সিং ইনস্টিটিউট ভবন রয়েছে প্রায় সাত লাখ স্কয়ার ফুট জায়গায়।

এরমধ্যে ১০ তলা বিশিষ্ট ভবন দুটি, পাঁচ তলা বিশিষ্ট ছাত্রবাস ভবন চারটি ও ছয় তলা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভবন একটি। মেডিকেল শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক হাজার ১০০ ও নার্সিং শিক্ষার্থী ৫৫০ জন। কর্মকর্তা ও কর্মচারীর সংখ্যা এক হাজার ৭০০ জন।

মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের অ্যাসিটেন্ট ডিরেক্টর জেনারেল এমডি ফজলুর রহমান জানান, গণবিজ্ঞপ্তির পরিপ্রেক্ষিতে তারা আজ সোমবার জেলা প্রশাসনকে লিখিতভাবে অবহিত করবেন।

তবে এ অবহিতকরণ কী বিষয়ে থাকবে সে ব্যাপারে কোনো মন্তব্য না করে তিনি বলেন, আমরা মানবিক দিক বিবেচনার কথা জানাবো।

ছামির মাহমুদ/এফএ/এমএস

আরও পড়ুন