সন্তানের স্বীকৃতির দাবিতে মায়ের আমরণ অনশন
গর্ভের সন্তানের স্বীকৃতি ও স্ত্রীর অধিকার ফিরে পেতে সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা নোয়াকাটি গ্রামে স্বামীর বাড়িতে আমরণ অনশন করছেন স্মৃতি নামে এক গৃহবধূ। অবশ্য এজন্য তাকে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে শ্বশুরালয়ে। স্বামী হাসান নিজেকে রক্ষা করতে গা ঢাকা দিয়েছে।
পাটকেলঘাটা থানার নোয়াকাটি গ্রামের শ্বশুর বজলু সরদারের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটেছে। গত ১২ জুলাই থেকে অনশনের মধ্য দিয়ে স্বামীর বাড়িতে দিন কাটছে এই নববধূর।
স্থানীয়রা জানায়, কলারোয়া থানার ঝাউডাঙ্গা গ্রামের আজিবর সরদারের ছেলে শহীদ সরদারের সঙ্গে পাটকেলঘাটা থানার নোয়াকাটি গ্রামের মাহমুদ সরদারের মেয়ে স্মৃতির বিয়ে হয়। ৬ মাস আগে স্বামী শহীদের সঙ্গে মনোমালিন্য হলে স্মৃতি বাবার বাড়ীতে ফিরে আসেন। তারপর থেকে প্রতিবেশী বজলু সরদারের ছেলে হাসান (২৪) সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে স্মৃতির। এরপর শুরু হয় মন দেয়া-নেয়া। এক পর্যায়ে স্মৃতির গর্ভে সন্তান আসে।
স্মৃতি জাগো নিউজকে জানায়, গর্ভের সন্তানের কথা প্রেমিক হাসানকে জানালে হাসান স্বামী শহীদকে ডিভোর্স দিতে বলে। তার কথামতো ডিভোর্স দিই আগের স্বামীকে। গত ১২ জুলাই দুই লাখ টাকা কাবিনের মাধ্যমে বিবাহও করি আমরা। এরপর স্বামী হাসান ও তার বোন গর্ভের সন্তান নষ্ট করার কথা বলে। এ কথায় রাজি না হওয়ায় হাসান বাড়ি থেকে পালিয়ে যায়। এর মধ্য দিয়ে শ্বশুরালয় স্মৃতিকে মেনে নিতে অস্বীকার করেন।
উপায় না পেয়ে গত ১২ জুলাই থেকে স্বামী সন্তানের স্বীকৃতি ও স্ত্রীর অধিকারের দাবিতে এই নববধূ শ্বশুরবাড়ির বারান্দায় আমরণ অনশন শুরু করেন। এ নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে এক সালিশি বৈঠকও হয়। বৈঠকে স্বামী হাসানকে একটি মোটরসাইকেল ও বরপক্ষের ৫০ জনকে খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। যে অনুযায়ী প্রস্তুতিগ্রহণ করেছে স্মৃতির পরিবার।
এদিকে, আগের সিদ্ধান্ত বদল করে একটি মোটর সাইকেল, নগদ দুই লাখ টাকা ও ৫০ জন বরযাত্রীকে খাওয়ানোর নতুন প্রস্তাব দেয় হাসানের পরিবার। না হলে স্মৃতিকে ঘরে তুলে নেবে না বলে জানিয়ে দেয় শ্বশুরালয়।
এলাকাবাসী জানায়, আসলে হাসানের বাবা-মা স্মৃতিকে মেনে নিতে চায় না। তাই তারা নতুন নতুন শর্ত দাঁড় করিয়ে স্মৃতির পরিবারকে বিপাকে ফেলছে।
এ বিষয়ে হাসানের মা-বাবা বলেন, আমরা এ বিয়ে মানি না। কখনই তাকে ঘরে তুলে নেব না।
পাটকেলঘাটা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, ঘটনাটি শুনেছি। তবে থানায় কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি। কেউ অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আকরামুল ইসলাম/এএম/এমএস