সিলেটে রাজনৈতিক দলগুলোর রুগ্ন দশা

সিলেটে প্রধান তিন রাজনৈতিক দলের রাজনীতিই রুগ্ন অবস্থায় রয়েছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির কমিটির মেয়াদ অনেক আগেই শেষ হয়ে গেছে। বিএনপির জেলা ও মহানগর শাখার তিনটি পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় গত ফেব্রুয়ারি মাসে। কিন্তু এখন পর্যন্ত দলটির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়নি। তিনটি দলেই রয়েছে গোপন ও প্রকাশ্য অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব। তিন দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোরও প্রায় একই অবস্থা।

অনেক আগেই সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে। দীর্ঘদিনেও নতুন করে গঠন করা হয়নি নতুন কমিটি। জাপার মহানগর কমিটি নেই দীর্ঘদিন থেকে। আর জেলার ৯০ দিনের আহ্বায়ক কমিটি গড়িয়েছে দু’বছরে। আর ধ্বজভঙ্গ অবস্থায় চলছে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের কার্যক্রম। আংশিক কমিটি নিয়ে কর্মসূচি বিহীনভাবে চলছে দলটির কার্যক্রম।

সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির বেশির ভাগ নেতারাই দলীয় কাজে নিষ্ক্রিয়। হাতেগোনা কয়েকজন নেতা মিলে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন দলকে। সামনে কেন্দ্রীয় সম্মেলন থাকায় এখনই জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পরই দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে নতুন কমিটি আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী।

আওয়ামী লীগের অবস্থায় জেলা ও মহানগর যুবলীগে। প্রায় এক যুগের বেশি সময় ধরে মেয়াদোর্ত্তীণ কমিটি দিয়ে চলছে জেলা যুবলীগ। আর মেয়াদোত্তীর্ণ আহ্বায়ক কমিটি দিয়ে চলছে মহানগর শাখা। তবে শিগগিরই সম্মেলনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন জেলা যুবলীগের সভাপতি শামীম আহমদ ও মহানগরের আহ্বিায়ক আলম খান মুক্তি।

সিলেট জেলা ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের কার্যক্রমও চলছে আংশিক কমিটি দিয়ে। তবে শিগগিরই কমিটি পূর্ণাঙ্গের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জাগো নিউজকে জানিয়েছেন জেলা সভাপতি আফসার আজিজ ও মহানগরের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাস মিঠু।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক বছর আগে সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। নানা ধরনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে প্রায় ৪ মাস আগে স্থগিত করা হয় জেলা ছাত্রলীগের কমিটি। আর এক বছরেও পূর্ণাঙ্গ হয়নি মহানগরের আংশিক কমিটি। কমিটি পূর্ণাঙ্গের ব্যাপারে কেন্দ্রকে তাগিদ দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মহানগর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আলীম তুষার।

এদিকে, প্রধান বিরোধী দল হলেও সিলেটে কোনো কার্যক্রম নেই জাতীয় পার্টির। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব নিয়েই বেশি ব্যস্ত সংগঠনটির নেতাকর্মীরা। মেয়াদোত্তীর্ণ আ্বায়ক কমিটি দিয়েই চলছে জাতীয় পার্টি। তবে আহ্বায়ক আবদুল্লাহ সিদ্দিকী জানিয়েছেন, বিদেশ সফর শেষে এরশাদ দেশে এলেই সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হবে।

অপরদিকে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির শীর্ষ তিন পদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনের মাধ্যমে ঠিক করা হয় সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক। প্রায় পাঁচ মাস ধরে আংশিক এই কমিটি দিয়েই চলছে বিএনপির কার্যক্রম। পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ।

সিলেট জেলা ও মহানগর ছাত্রদলের আংশিক কমিটি ঘোষিত হয়েছিল প্রায় এক বছর আগে। কিন্তু অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে এখন পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন সম্ভব হয়নি। তবে সকল দ্বন্দ্বের নিরসন ঘটিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া দ্রুত এগিয়ে চলছে বলে জানান জেলা সভাপতি সাঈদ আহমদ ও মহানগর সভাপতি নূরুল আলম সিদ্দিকী খালেদ।

ছামির মাহমুদ/এসএস/পিআর