এখনো অন্ধকারে পড়ে আছে শরীয়তপুরের ৫ গ্রাম
শরীয়তপুরের ৫টি গ্রাম এখনো আধুনিক যুগের সকল সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এসব গ্রামের প্রায় ১৫০০ মানুষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, বিদ্যুৎ কোনো কিছুর মুখই দেখছে না। শিক্ষার অভাবে অন্ধকার এ পরিবেশে বেড়ে চলেছে বিভিন্ন অপরাধ।
জানা গেছে, জেলার জাজিরা উপজেলার বিলাসপুর, বড়কান্দি ও পালেরচর ইউনিয়নের কলিকালার চর-১, কলিকালার চর-২, দোয়ালী, খলিফা কান্দি ও গাঁওপাড়া গ্রামের মানুষগুলো এখনো সেই অন্ধকার যুগেই পড়ে আছে। সেখানে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ বিদ্যালয়, এফতাদায়ি মাদরাসা কিংবা কোনো প্রকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। নেই কোনো পাকা রাস্তা। বিদ্যুতের আলো তারা চোখে দেখেনি।
শিশু জিহাদ, হৃদয়, সাগর, সাজ্জাদ, রনি, স্মৃতি আক্তার ও মিথিলা বলেন, আমাদেরও পড়তে ইচ্ছে করে। আমাদের এখানে একটি মসজিদে আরবি ছাড়া অন্য কিছুই পড়ানো হয়না। যদি একটা স্কুল থাকতো তাহলে আমরা পড়ালেখা করতে পারতাম।
নূর ইসলাম রাড়ী বলেন, আমরা সকল প্রকার সামাজিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। কেউ আমাদের খবর নেয় না। মূল ভূখন্ড থেকে প্রায় ৪/৫ ঘণ্টা ইঞ্জিন চালিত নৌকায় পদ্মা পাড়ি দিয়ে আমাদের গ্রামে আসতে হয়। তাই কোনো জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা বা প্রশাসনের লোকও এখানে আসেন না। আমাদের ছেলে মেয়েদের পড়ালেখার জন্য কয়েকটি বিদ্যালয় প্রয়োজন।
বাবুল কোতোয়াল বলেন, আমাদের গ্রামে চিকিৎসার জন্য কোনো হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রও নেই। দূর্গম এলাকা হওয়ায় কোনো পল্লী চিকিৎসকও এখানে বসেন না। মাঝে মাঝে পল্লী চিকিৎসক বায়েজিত ট্রলারে করে এখানে এসে আমাদের চিকিৎসা করে যান।
ছালেহা বেগম জানান, এই এলাকায় কোনো হাঁটবাজার নেই। পাঁচটি গ্রামে প্রায় ১৫০০টি পরিবার বাস করে। আমাদের প্রয়োজনীয় সামগ্রীর জন্য মাসে দু’বার ট্রলার যোগে নিকটবর্তী মাঝিরঘাট বা জাজিরা বাজারে গিয়ে কিনে আনি। আমাদের একটি হাসপাতাল ও স্কুল প্রয়োজন।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমি নতুন এসেছি। আমার বিষয়টি জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখি কেউ যদি বিদ্যালয়ের জন্য যায়গা দেয় তবে বিদ্যালয় তৈরির ব্যবস্থা করবো।
জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, আমার বিষয়টি জানা নেই। আমি খোঁজ নিয়ে দেখি কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় কিনা।
ছগির হোসেন/এফএ/এবিএস