ঝালকাঠিতে মশাবাহিত রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা
ঝালকাঠিতে চলতি বর্ষা মৌসুমে মশার কামড়ে ফাইলেরিয়া থেকে শুরু করে মশাবাহিত নতুন সংক্রামক রোগ এনকেফালাইটিজ মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মস্তিষ্কের প্রদাহসহ মস্তিষ্ক বিকৃতির আশঙ্কার এ রোগে আক্রান্ত রোগীর কোনো পরিসংখ্যান সিভিল সার্জন অফিসে নেই।
আদৌ ঝালকাঠিতে এ রোগী আছে কি না তাও জানাতে পারেনি সিভিল সার্জন অফিস। ফলে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে এ জেলার মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে ঝালকাঠি শহরেও মশা নিধনের কোনো উদ্যোগ নেই। দীর্ঘ দিনেও মশা নিধনের কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
চিকিৎসকরা জানান, জাপানিজ এনকেফালাইটিজ আক্রান্ত রোগীর উপসর্গ হিসেবে মাথা ব্যথা, চোখে ঝাপসা দেখা, জ্বর ও শরীরে ঝাঁকুনি দেখা দেয়। ফাইলেরিয়া আক্রান্ত রোগী ব্যাকটেরিয়াজনিত এনকেফালাইটিস ও নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যেও একই ধরণের উপসর্গ দেখা দেয়ায় চিকিৎসকরা রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে প্রায়ই সংশয়ে পড়েন।
এ সংক্রমণে মৃত্যুর হার ৩০ শতাংশ হলেও এ পর্যন্ত কতজন আক্রান্ত হয়েছে বা কতজন মারা গেছে এর সঠিক কোনো পরিসংখ্যান নেই স্থানীয় সিভিল সার্জন অফিসে।
সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. গোলাম ফরহাদ জানান, মশাবাহিত সংক্রমণে আক্রান্ত রোগী তুলনামূলক কম আসেন। আসলে সব রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। তবে তাদের শেষ পরিণতি কী হয়েছে তা তিনি বলতে পারেননি।
তিনি আরো জানান, এ রোগে বেঁচে থাকাদের মধ্যে শতকরা ৪০ থেকে ৫০ ভাগ রোগীর স্নায়ুবিক জটিলতা, এমনকি পাগল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। আক্রান্তদের অধিকাংশেরই বয়স ১৬ বছরের নিচে। মশার কামড়ে ফাইলেরিয়া হয়। কিন্তু এনকেফালাইটিজে কতজন আক্রান্ত হয়েছে এর কোনো পরিসংখ্যান নেই।
গ্রামাঞ্চলে এ রোগের প্রভাব বেশি। তবে আক্রান্তদের অনেকেই চিকিৎসা নিতে হাসপাতাল পর্যন্ত আসেন না। ফলে এতে আক্রান্তদের সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে না।
স্বাস্থ্য বিভাগের একটি সূত্র জানায়, বাংলাদেশে ২০০৭ সালে প্রথমবারের মতো ধরা পড়ে জাপানিজ এনকেফালাইটিজ। এর উল্লেখযোগ্য অংশই উত্তরাঞ্চলের। মশাবাহিত রোগ বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ তৈরি করায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এ বছর থেকে বিষয়টি নিয়ে দিবস পালনের উদ্যোগ নিয়েছে।
বিশ্বের যে কয়েকটি দেশে মশাবাহিত ছয়টি রোগ দেখা যায় সেগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। রোগগুলো হলো- ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর, ফাইলেরিয়াসিস, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া ও জাপানিজ এনকেফালাইটিজ।
আতিকুর রহমান/ এফএ/পিআর